ঢাকা: বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কাগজ ও চিনিকলগুলোর আধুনিকায়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। এছাড়া পারস্পরিক লাভজনক বিষয়েও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী দেশটি।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) শিল্প মন্ত্রণালয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াং।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে মাঝারি শিল্পখাতে চীনের বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার করতে বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
বাংলাদেশে উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন শিল্প কারখানার পাশাপাশি মাঝারি শিল্প কারখানায় চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহবান জানান শিল্পমন্ত্রী।
আমু বলেন, চীনা প্রতিষ্ঠান ‘চায়না কমপ্লান্ট’ বাংলাদেশে শাহজালাল সার কারখানা নির্মাণ করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ কারখানার নির্মাণ কাজ শেষ করতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিতে রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
বাংলাদেশের কাগজ ও চিনিকলগুলোর আধুনিকায়নে বাস্তবসম্মত প্রস্তাব পেলে সরকার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে বলে রাষ্ট্রদূতকে জানান আমু।
বৈঠকে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনের ভাইস প্রিমিয়ার চলতি বছরের মে মাসের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ সফরে আসবেন। সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শাহজালাল সার কারখানা উদ্বোধন করতে পারেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। বাংলাদেশের চাহিদামাফিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যৌথ কর্মশালার আয়োজন করে সহায়তা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র চিহ্নিত করার প্রস্তাব দেন এই রাষ্ট্রদূত।
পরে শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে তার দফতরে সাক্ষাত করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার হাইকমিশনার জিওফ কিউ এম ডয়েজ।
বৈঠকে হাইকমিশনার জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য ও সিরামিক আমদানি করছে। আগামীতে বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য আরও বেশি করে আমদানি করা হবে। একই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইউরিয়া সার ও সুগার বিট আমদানি করতে শিল্পমন্ত্রীকে আহবান জানান কিউ এম ডয়েজ।
দু’দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে (জি টু জি) ইউরিয়া সার আমদানির সম্ভাব্যতা শিল্প মন্ত্রণালয় যাচাই করে দেখবে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী। প্রস্তাবটি বাংলাদেশের অনুকূলে হলে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব একটি চিনিকলে পরীক্ষামূলকভাবে সুগারবিট থেকে চিনি উৎপাদন করা হচ্ছে। এটি সফল হলে সব চিনিকলেই সুগারবিট থেকে চিনি উৎপাদন করা হবে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সুগারবিট আমদানির প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে।
উভয় বৈঠকে শিল্পসচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৫