ঢাকা: সবাই যখন পড়ালেখা শেষ করে চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনেই ছুটছিলেন, তখন অন্য পথে হাঁটেন শাহাবুদ্দিন রাসেল। নিজ উদ্যোগে ব্যবসা শুরু করেন।
থাইল্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে দেশীয় ক্রেতাদের মধ্যে বাজারজাত করে পুরোপুরি ব্যবসায়ী বনে যান তিনি। শুধু বিদেশ থেকে পণ্য নিয়ে ব্যবসা করবেন এমন ধারণা থেকেও বেরিয়ে আসেন। দেশের পণ্য বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে এরইমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে চার দিনব্যাপী ‘থাইল্যান্ড উইক ২০১৫’তে থাইল্যান্ডের পণ্য প্রদর্শনী নিয়ে কথা হয় রাসেলের সঙ্গে।
ব্যবসা শুরুর প্রসঙ্গে উঠতেই রাসেল জানান, ১৯৯৫ সালের দিকে বাণিজ্য মেলায় থাইল্যান্ডের বিভিন্ন পণ্যের প্রদর্শনী দেখেন তিনি। ওই সময় তার বন্ধুরাও বিদেশি পণ্য নিয়ে দেশে বাজারজাত করতেন। এরপর বাবার সঙ্গে আলোচনা করে বন্ধুদের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের পণ্য পাইকারি বিক্রি শুরু করেন।
সে সময় তার বাবাও থাইল্যান্ডের পণ্য দেশে বাজারজাত করতেন। এক্ষেত্রে বাবার কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছেন রাসেল।
স্নাতক (বিএ) পাশ করা এই সফল উদ্যোক্তা বলেন, পড়াশোনা শেষ করে ঘুরে ঘুরে চাকরি সংগ্রহ করতে হবে এমন ধারণা অন্তত এ সময়ের তরুণদের মধ্যে থাকা উচিত নয়। অল্প পুঁজিতে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে সফলতা পাওয়া সম্ভব। তবে কাজের ক্ষেত্রে বিশ্বাস ও একাগ্রতা অবশ্যই থাকতে হবে।
রাসেল জানান, এ পেশায় সফলতা পেতে চাইলে অবশ্যই পণ্য, ক্রেতা ও বাজার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে ইন্টার্নশিপ করে নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন মেলায় অংশ নেওয়া। এতে সব বিষয়ে ধারণা পাওয়া সহজ হবে।
নিজেরাই পণ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করাও যায়, তার প্রমাণও দিতে শুরু করেছেন এ তরুণ উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের ক্লে ফ্লাওয়ারের চাহিদা আমাদের দেশে অনেক বেশি। কাঁচামাল পেলে এ ধরনের পণ্য আমরাই তৈরি করতে পারবো। এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এরইমধ্যে কয়েকজনকে থাইল্যান্ড থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এতে দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।
দীর্ঘ ১৩ বছরে ধরে তিনি ঢাকা ও চট্রগ্রামে বিভিন্ন মেলায় অংশ নেন। এতে তাদের পণ্যের বিস্তৃতিও বেশ ভালো হয়েছে। বেস্ট সেলার ও ইন্টেরিয়র পুরস্কারও পেয়েছেন রাসেল।
বিভিন্ন উপহার সামগ্রী, কৃত্রিম ফুল, ক্লে ফ্লাওয়ার, লেডিস ব্যাগ, গহনাসহ নানা পণ্য সরবরাহ করে থাকেন রাসেল। তার শো রুমের নাম থাই গিফট শপ।
৩৮ বছর বয়সী এ ব্যবসায়ীর কেমন আয় হচ্ছে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এ পেশায় তিনি অনেক সুখি। নতুন নতুন পণ্য নিয়ে আসার পর যখন কেউ বলে এ পণ্যটি অনেক ভালো, তখন খুব ভালো লাগে তার।
গত বুধবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে শুরু হওয়া ‘থাইল্যান্ড উইক ২০১৫’ চলবে শনিবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত। দ্যা রয়েল থাই অ্যাম্বাসি এবং থাইল্যান্ড বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রমোশন এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৫