ঢাকা: ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম বাজারে তুলেছে ‘কালাপাহাড়’ নামে বিশালাকৃতির ষাঁড়। কেরানীগঞ্জের বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা মসজিদের কাছে দেখা মিলছে ষাঁড়গুলোর! গায়ের রং কুচকুচে কালো, মাথায় ও তলপেটে সাদা ছোপ ছোপ দাগ।
সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম কোরবানির বাজারে এই গরুগুলোর প্রতিটির দাম হাঁকছে ৮ লাখ টাকা করে! ফার্মটির মালিকের দাবি বর্তমান বাজারে এগুলিই সবচেয়ে বড় কোরবানির পশু। প্রতিষ্ঠানের মালিক বাংলানিউজকে জানান, দুই বছর আগে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে জন্ম এই কালা পাহাড়ের। এই ষাঁড় থেকে মাংস পাওয়া যাবে কমপক্ষে ১৫ মণ। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৮ কেজি খাবার খায় এক একটি কালা পাহাড়।
কালাপাহাড়ের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রয়েছে- ভাঙা চাল, সেদ্ধ ভাত, ভূষি, খেসারি, ডাবলি, খৈল, কাঁচা সবুজ ঘাস ও ধানের খড়ের ১৫ কেজি মিশ্রণ। এছাড়াও ৩/৪ কেজি দানাদার খাদ্য এবং ২৫ থেকে ৩০ লিটার পানি।
শুধু খাবারই নয়, কালা পাহাড়ের পরিচর্যাতেও রয়েছে বিশেষ আয়োজন। ২৪ ঘণ্টা ফ্যান ও বিদ্যুতের ব্যবস্থার মধ্যেই রাখতে হয় তাকে। কেবল প্রতিদিন গোসল করানোর সময়ে বন্ধ থাকে ফ্যান। তার বসবাসের স্থানও বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়।
‘কালা পাহাড়’ নামে বিশালাকৃতির এই ষাঁড়গুলিকে শারীরিকভাবে সুস্থ্য-সবল রাখতে নিয়মমাফিক ব্যায়ামও করাতে হয়। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে তার চার পা ফুলে যায়, এজন্য সকালে নিয়ম করে হাঁটাচলা করাতে হয় ষাঁড়গুলোকে। শারীরিক যেকোন সমস্যায় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী রয়েছে ওষুধ সেবনের ব্যবস্থাও।
সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে কথা হয় গরুগুলির প্রধান পরিচর্যাকারী আব্দুর রহিমের সঙ্গে। তিনিই আদর-যত্ন দিয়ে বড় করেছেন গরুগুলিকে।
আব্দুর রহিম বলেন, কালা পাহাড় এই ফার্মে সব থেকে সেরা ষাঁড়। এর দাম ৮ লাখ টাকা। কমপক্ষে ১৫ মণ মাংস পাওয়া যাবে ষাঁড়গুলো থেকে। ছেলে-মেয়ের মতো আদর-যত্ন দিয়ে এগুলিকে বড় করতে হয়েছে। ফার্মের ভেতর ২৪ ঘণ্টা ফ্যান চলে। অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের পাতা ফুলে যায়, তাই সকাল-সকাল রাস্তায় হাঁটানো লাগে।
সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে কালা পাহাড় ছাড়াও রয়েছে ধলা পাহাড় ও লাল পাহাড় নামে আরও দুই প্রজাতির গরু। তিন প্রজাতির মোট ১০০টি গরু দেখা রয়েছে ফার্মটিতে। এই ফার্মের গরুর সবনিম্ন মূল্যও তিন লাখ টাকা। ১০০টি গরু প্রতিদিন গড়ে ১১ থেকে ১২শ’ কেজি খাবার খায়।
ফার্মের মালিক নিজ ফার্মসহ দেশের বিভিন্ন ফার্ম থেকে ভালো মানের বাছুর সংগ্রহ করেন। এছাড়াও কোনো গবাদি পশুর হাটে বড় ও সেরা জাতের গরু দেখলে সেগুলিও নিয়ে আসেন তার ফার্মে। এ ফার্মের বড় গবাদি পশুগুলো কোনো হাঁটে বিক্রি করা হয় না। দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী গ্রুপ কোরবানির জন্য এখান থেকে গরু কিনে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৫
এমআইএস/এসএইচ/এমজেএফ