ঢাকা: ট্রেড ইউনিয়নের ক্ষেত্রে বাংলালিংক বাংলাদেশের শ্রম আইন মেনে চলবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এরিক অস।
গ্রাহকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বাংলালিংক ডিজিটাল হতে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে খাপ খাওয়াতে না পারলে কিছু কর্মী চলে যাবেন।
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন এরিক অস।
সম্প্রতি বাংলালিংকে একজন কর্মীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে এরিক অস বলেন, কোম্পানিটি ডিজিটাল হতে যাচ্ছে, মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল পরিবর্তনের সঙ্গে অনেকেই খাপ খাওয়াতে পারবেন না, তারা চলে যাবেন। তাদের জন্য সম্মানজনক ভলান্টিয়ারি সেপারেশন স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। তারা যথাযথ পাওনা পাবেন।
কোম্পানির ডিজিটালাইজেশনের পথে দক্ষ ও যোগ্যরাই টিকে থাকবেন বলেও মন্তব্য করেন এরিক।
বাংলালিংকের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিও) শিহাব আহমেদ বলেন, এ প্রক্রিয়ায় আরও কিছু দক্ষ কর্মী যোগ হবেন।
বাংলালিংকে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অনুমতি আসবে কি-না- সাংবাদিকদের প্রশ্নে এরিক অস বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রম আইন মেনে চলবে বাংলালিংক।
চাকরির নিরাপত্তায় সম্প্রতি বাংলালিংকের কর্মীরা ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য শ্রম অধিদফতরে আবেদন জানান।
এরিক অস বলেন, আমরা কমপ্লায়েন্স মেনে চলবো। প্রত্যেকটা কর্মী বাংলালিংকের একটা অংশ। যারা চলে যেতে চান, তাদের সম্মানজনক সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে।
ট্রেড ইউনিয়ন করতে দেওয়া হবে কি-না- প্রশ্নে তিনি বলেন, শ্রম আইন আছে, আমরা সেটা অনুসরণ করবো।
গুলশানে বাংলালিংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে সিইও বলেন, ওই রাতে (১১ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানির কিছু কর্মী এবং বাইরের লোকজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছিলেন। কোম্পানির কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। আমাদের কাছে কর্মীদের নিরাপত্তাই প্রধান। নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীকে বলেছি, নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য।
কোম্পানিতে দুর্নীতি হচ্ছে কি-না- এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কিছু অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। করপোরেট কোম্পানি হিসেবে বলতে চাই না। তবে বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিয়েছি।
তিনি বলেন, অতীতে অনিয়মের কারণে অনেক কর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে, ভেন্ডারের সঙ্গেও (সরবরাহ প্রতিষ্ঠান) চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। বাংলালিংক দুর্নীতির ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’।
রবি ও এয়ারটেল একীভূত হলে কোনো প্রভাব পড়বে কি-না- জানতে চাইলে বাংলালিংকের সিইও বলেন, আমরা চাই লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হোক, এটা থাকবে বলে বিশ্বাস করি।
গ্রাহকদের সেবার মান বৃদ্ধি হলো কি-না- এসব বিষয় চলে আসবে বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য টাওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে পাঁচ হাজার ৭০০ করা হবে। চলমান বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনে বিনিয়োগের তথ্যও তুলে ধরেন সিইও।
বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে বাংলালিংকের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে এরিক অস বলেন, তিন কোটি ২০ লাখের বেশি গ্রাহককে দেশের সবচেয়ে দ্রুত গতির থ্রি-জি নেটওয়ার্কের সাহায্যে সেবা দিয়ে আসছি, এজন্য আমরা গর্বিত। এখন সময় এসেছে আরও এগিয়ে যাওয়ার। আমরা যদি আমাদের গ্রাহকদের ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করতে চাই তাহলে আমাদেরকে আমাদের গ্রাহকের মতো অথবা তার চেয়ে বেশি ডিজিটাল হতে হবে। এটি সম্পন্ন করতে হলে আমাদের প্রথাগত টেলিযোগাযোগ সেবা কোম্পানি থেকে একটি ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তিত হতে হবে।
এরিক অস বলেন, আমি বাংলালিংকের সঙ্গে এই নতুন ডিজিটাল যাত্রা শুরু করতে পেরে সম্মানিত এবং আনন্দিত। আমি সত্যিকারভাবে বিশ্বাস করি, আমরা বাংলালিংককে আমাদের গ্রাহকদের জন্য একটি ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো এবং সরকারকে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন সত্যি করতে সাহায্য করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
এমআইএইচ/এএসআর
** ডিজিটাল পথে বাংলালিংক