ঢাকা: বিশ্বজুড়েই ‘সোনালী আঁশ’ খ্যাত বাংলাদেশের কাঁচাপাটের কদর, তা কমেনি এখনও। হাতের ব্যাগ থেকে শুরু করে রাজপথের মার্সিডিজ বেঞ্চ গাড়ি এমনকি মহাকাশ যান তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় বাংলাদেশের পাট।
এক সময় বৈদেশিক মুদ্রার ৮৯ শতাংশ এসেছে এই ‘সোনালী আঁশ’ থেকে, অর্থকারী এই ফসলের কারণে পাকিস্তানের নজরও ছিলো বাংলাদেশের ওপর।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এসব কথা বলেন।
‘সোনালী আঁশ’ পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পাটপণ্যের মেলার আয়োজনসহ নানা পদক্ষেপ এবং পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আইনের বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য স্মারক সম্মাননা প্রাপ্তদের নাম ঘোষণার জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এসময় পাটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশীয়ভাবে ব্যবহার বাড়াতে কাঁচাপাট রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে সরকার, এতে বিপাকে পড়ে যায় নির্ভরশীল দেশগুলোর শিল্পপ্রতিষ্ঠান। কাঁচপাটের উপর নির্ভরশীল হয়ে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন দেশ থেকে রিকোয়েস্ট এসেছে, এখনও বৃহৎ পরিসরে রপ্তানি চালু করিনি।
‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ না হয়ে যায়। তাই এখন সীমিত আকারে রপ্তানি করছি। ’
মহাকাশে পাঠানো যানে বাংলাদেশের পাটের ব্যবহারের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিছু দিন আগে জার্মানি (অ্যাম্বাসেডর) এসেছেন, তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশের কাঁচাপাটের উপর নির্ভরশীল হয়ে জার্মানিতে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে, চাঁদে যে রকেট যায় তার ইন্টেরিওর বাংলাদেশের কাঁচাপাট দিয়ে তৈরি করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে যেনে কোনো দেশের সাথে সম্পর্ক খারাপ হয়ে না যায়, সেজন্য সীমিত পরিসরে রপ্তানির নির্দেশ আছে।
মার্সিডিজ বেঞ্জসহ বিভিন্ন দামী গাড়িতেও বাংলাদেশের কাঁচাপাট ব্যবহার হয়, জানান প্রতিমন্ত্রী।
গত নভেম্বর মাস থেকে পাটপণ্যের মোড়ক বাধ্যতামূলক ব্যবহারের আইন প্রয়োগ করে সরকার, যা দেশের মানুষ আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন মির্জা আজম।
‘এই পাট মুক্তিযুদ্ধের অংশ, পাটের শত্রু পলিথিন ও প্লাস্টিক..., ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাক হানাদার বাহিনী আক্রমণ করে, কিছু রাজাকার তাদের সহযোগিতা করেছে। পাটের শত্রু প্লাস্টিক-পলিথিন, পলিথিন-প্লাস্টিকের কিছু ব্যবসায়ী তারা রাজাকরের ভূমিকায়’।
সাংবাদিকদের দেশপ্রেম জাগ্রত করে লেখনীর মাধ্যমে দেশের মানুষকে জাগ্রত করতে পরলে পাটের ব্যবহার আরও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লাহ খন্দকার, বিজেএমসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল হুমায়ূন খালেদ, পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬/আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা.
এমআইএইচ/এটি
** রাজধানীতে পাটজাত পণ্যের মেলা শুরু ৬ মার্চ