ঢাকা: চোরাচালানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার কোনো সুযোগ তৈরি হতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুনর্গঠিত চোরাচালান নিরোধ কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের সভাপতি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নজিবুর রহমান।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে ‘পূর্ণগঠিত চোরাচালান নিরোধ কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের প্রথম সভায়’ তিনি এ কথা জানান।
সভায় চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, চোরাচালানের বড় ক্ষতিকর দিক হচ্ছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, রাজস্ব হানি ঘটায়। মাদকদ্রব্য চোরাচালানের সঙ্গে সমাজ ব্যবস্থা বিপন্ন হওয়া জড়িত।
তিনি বলেন, একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ফলাফল ভিত্তিক কাজ করা হবে। কোনভাবেই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় সে ধরনের কোনো সুযোগ তৈরি করতে দেওয়া হবে না। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে সর্বাত্মক গুরুত্ব দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশ দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রীর ২০২১ ও ২০৪১ রুপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা মধ্যম আয়ের দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছি। এর জন্য প্রচুর রাজস্ব প্রয়োজন। চোরাচালানে যে রাজস্ব হানিকর বিষয় আছে তা আমরা গভীর ভাবে অনুধাবন করছি। বিষয়টি ঠেকানো হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে মাদকদ্রব্যের যে অনুপ্রবেশ তা রোধ করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ সরকারের সব সংস্থা সক্রিয় আছে। তারা যে কর্মসূচি নিয়েছে, সে কর্মসূচি বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স সহায়তা করবে।
টাস্কফোর্স পারস্পরিক সহযোগিতা ও টিমওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করবে। এ টাস্কফোর্সে একবছরে কোথায় কি কাজ করবে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, টাস্কফোর্স শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে আঞ্চলিক পর্যায়ে টাস্কফোর্সকে রেজাল্ট ওরিয়েন্টেড করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে চোরাচালান নিরোধে যে কাজ হচ্ছে উচ্চস্তর থেকে তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে কাজ করায় মনোযোগ দেওয়া হবে।
টাস্কফোর্সের শুভযাত্রা শুরু হলো জানিয়ে নজিবুর রহমান বলেন, টাস্কফোর্সের সব সদস্য রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে সব বিষয়ের ওপরে রাখার বিষয়ে অঙ্গীকার করেছে। এর মাধ্যমে এ টাস্কফোর্স চোরাচালান রোধে তৎপর হবে।
প্রিভেন্টিভ, কিউরেটিভ দু’ভাবে কাজ করবো। রিঅ্যাক্টিভ না হয়ে প্রো-অ্যাক্টিভ হয়ে এ টাস্কফোর্স কাজ করবে। চোরাচালান নিরোধে ভিডিও কনফারেন্স, ই-মেইল গ্রুপ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্মকাণ্ড জোরদার করা হবে। রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে সমুন্নত করতে চোরাচালানের মতো রাষ্ট্রীয় ব্যাধিকে নিরোধে এগিয়ে আসতে ব্যবসায়ী ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান চেয়ারম্যান।
অসৎ ব্যবসায়ী ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। টাস্কফোর্সের সদস্যের জন্য যৌথ প্রশিক্ষণ, মনিটরিং, তথ্যের আদান-প্রদান করবে।
টাস্কফোর্স চোরাচালানের একটি গবেষণাপত্র তৈরি করা হবে। এতে চোরাচালানের পরিসংখ্যানসহ পুরো চাল-চিত্র থাকবে। মুদ্রাপাচার বড় ধরনের একটি বড় অপরাধ। একটি ফোরাম এ নিয়ে কাজ করছে। এ টাস্কফোর্স ওই ফোরামের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণায় প্রতিনিধি, বিভাগীয় কমিশনাররা, বিজিবি প্রতিনিধি, ডিজিএফআই প্রতিনিধি, এনএসআই প্রতিনিধি, রেলওয়ে পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিভিন্ন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারসহ ১৯টি সংস্থার ৪৩ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
আরইউ/এসএইচ
** পুনর্গঠিত চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্সের সভা