ঢাকা: দেশে একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (স্পেশাল ইকোনমিক জোন-এসইজেড) করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যেখানে কর্মসংস্থান হবে এক কোটি বেকারের।
সরকারের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে এসব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে। চীন, জাপান ও ভারত বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে অনেক আগেই।
তাদের মধ্যে চীনকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। জাপান ও ভারতকে জায়গা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এবার নতুন করে শ্রীলঙ্কা বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
শ্রীলঙ্কার প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
বেজা’র একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে প্রথমে এগিয়ে এসেছে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র চীন। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে একটি চুক্তিও হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনারের সঙ্গে ইতোমধ্যে বেজা’র বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি।
শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হলে সরকার তাদেরও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিতে প্রস্তুত বলে সূত্র জানিয়েছে।
বেজা সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ৬ থেকে ১১ জুন চীন সফরের সময় চীনের প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
পরে বিশেষ অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল স্থাপনে ৯ জুন বেজা ও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সে অনুযায়ী চীনকে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ৭৭৪ দশমিক ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে দিচ্ছে সরকার।
অধিগ্রহণে ব্যয় হচ্ছে ৪২০ কোটি ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ২৯০ একর জমি সরকারি জমি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়ে গেছে। বাকিগুলো অধিগ্রহণ করা হচ্ছে।
চলতি বছরের জুনের মধ্যে অধিগ্রহণ সম্পন্ন ও মূল চুক্তি এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়ে যাবে। চায়না হারবার কোম্পানি অবকাঠামো নির্মাণ করবে।
সূত্র আরো জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় ভারতের বিনিয়োগকারীদের জন্য দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
গত বছরের ৬ জুন এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সে অনুযায়ী বাগেরহাটের মংলা ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অঞ্চল করতে জায়গা দেবে সরকার।
মংলায় ২০৫ একর ও ভেড়ামারায় ৩৭১ একর জায়গা চেয়েছে ভারত। মংলায় বন্দোবস্তের জায়গা কম রয়েছে। তবে ভেড়ামারায় চাহিদার বেশি পরিমাণ জমি রয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের সময় যৌথভাবে একটি চুক্তি হয়েছে। সে অনুযায়ী জাপানকে গাজীপুরের শ্রীপুরে ৬শ’ একরের বেশি পরিমাণ জমা দেওয়া হচ্ছে।
বেজা’র চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার বৈঠক করে প্রস্তাব দিয়েছেন। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিলে আমরা দিতে প্রস্তুত রয়েছি।
চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পর্কে তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। বরাদ্দ পেয়ে গেছি, জমিও প্রায় প্রস্তুত। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মূল চুক্তি হয়ে যাবে।
ভারত সম্পর্কে তিনি বলেন, ভারত যতো দ্রুত কাজগুলো এগিয়ে আনবে, ততো দ্রুত আমরা সহায়তা করতে পারবো। একটু সময় লাগতে পারে।
জাপানের বিষয়ে বেজা’র চেয়ারম্যান বলেন, জাপানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক না হলেও প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরের সময় জয়েন স্টেটমেন্টে অর্থনৈতিক অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে।
আগামী মাসের মধ্যে জাপানের অর্থনৈতিক অঞ্চল বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই ও পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে। এরপরই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলেও জানান তিনি।
চেয়ারম্যান বলেন, চীন, ভারত, জাপানের সঙ্গে জি টু জি’র ভিত্তিতে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হবে। এগুলো করতে একটু সময় লাগলেও বেসরকারিগুলোর কাজ দ্রুত শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০১৬
আরইউ/এএসআর