ঢাকা: পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পাইপলাইনে বিভিন্ন খাতের ৪৩টি প্রকল্প রয়েছে। এর বাস্তবায়নে ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) সকালে পিপিপি বোর্ড অব গভর্নরস এর প্রথম সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
পিপিপি বোর্ড অব গভর্নরস-এর চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাড়াও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
বিগত কয়েক বছরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হয় সভায়।
কার্যক্ষমতা ভাগ ও সাংগঠনিক কাঠামো, অংশীদার নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাবনা আসে সভায়। এছাড়া কার্যক্রম তরান্বিত করতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
সভায় জানানো হয়, পিপিপি পাইপলাইনে বিভিন্ন খাতের ৪৩টি প্রকল্প রয়েছে। যার বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আসবে।
বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়ন, বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন এবং চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাব্য সময় ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য পরিমাণের কথা তুলে ধরে সভায় আরও জানানো হয়, ৬ প্রকল্পের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পিপিপি কারিগরি তহবিলের ৭৭ কোটি টাকা ব্যয় করে ১৮টি প্রকল্পের সম্ভব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে যেখানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে। ১১টি প্রকল্পে বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে যেখানে সম্ভাব্য বিনিয়োগ আসবে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এছাড়াও ১০ টি প্রকল্প সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাই পর্যায়ে রয়েছে যেখানে সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বোর্ড অব গভর্নরস এর এই সভায় কার্যক্ষমতা ভাগ করে পলিসি ইস্যুগুলো বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারপার্সন হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে, কার্যাক্রম গতিশীল ও প্রকল্প বাস্তবায়নের বাধাসমূহ নিরসনের দায়িত্ব পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং অপারেশনাল দায়িত্ব দেওয়া হয় পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
সভায় বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য একটি যুগোপযোগী গাইডলাইন তৈরি, পিপিপি কর্তৃপক্ষের কার্য্ক্রম গতিশীল এবং সমৃদ্ধ করতে প্রস্তাবিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন, পিপিপি তহবিল পরিচালনা পদ্ধতি নির্ধারণ ও ক্ষমতা অর্পণ এবং প্রস্তাবিত তহবিল পরিচালন পদ্ধতি অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়।
পিপিপিতে সরকারি সংস্থ্যায় প্রস্তাবিত প্রকল্প ছাড়াও ‘আনসলিসাইটেড’ প্রস্তাব সমূহ চিহ্নিত করার সুবিধার্থে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত একটি ‘আনসলিসাইটেড’ প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ গাইডলাইন পর্যালোচনা করা হয় সভায়। গাইডলাইনটি অনুমোদিত হলে ‘আনসলিসাইটেড’ প্রকল্প চিহ্নিতকরণ ও প্রকিয়াকরণ সহজতর হবে এবং এ জাতীয় প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
পিপিপি কার্যাক্রমকে আরও গতিশীল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দ্রুত বাংলাদেশকে উন্নত করতে চাই। শুধু সরকার এটা করতে পারবে না। এজন্য আমাদের পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ দরকার।
উদাহরণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কোরিয়ার উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অবদানের কথা তুলে ধরেন। পিপিপি’র ধারণাকে মাথায় রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন তরান্বিত করার পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৬
এমইউএম/এমজেএফ/
** অভিনেতা ফরিদ আলীর চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর অনুদান