ঢাকা: লোককথা মতে ৬ হাজার বছর আগে কোনো এক অসুস্থ মিশরীয় রাজাকে পাট পাতা থেকে তৈরি স্যুপ খেতে দেওয়া হয়েছিল। যা তাকে সুস্থ-সবল করে তুলেছিল।
বহুমুখী পাটজাত পণ্য মেলায় পাট পাতার তৈরি সুস্বাদু চাও নজর কাড়ছে সবারই। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা পাট পাতার চা পরখ করছেন মনের আনন্দে। জাপানে এ পাট পাতার চা রফতানির চিন্তা-ভাবনাও করছেন উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট ও কৃষি পরামর্শক এইচ এম ইসমাঈল খানের যৌথ উদ্যোগে পাট পাতার চা-স্যুপ দেশে-বিদেশে জনপ্রিয় করে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু চলছে। পাটের তৈরি স্যুপ-চাসহ এতে উদ্যোক্তারা ১৩৫ ধরনের বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শন করছেন। সকল পাটপণ্য থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়।
আর মেলায়ও কোনো পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে না। চলছে শুধুই প্রদর্শন। সকল পণ্যই ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে বিক্রি করা হয়।
রোববার (০৬ মার্চ) মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) পর্যন্ত চলবে এ মেলা।
ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড শতাধিক রকমারি পাটপণ্যের পসরা বসিয়েছে মেলায়।
ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশিদুল করিম মুন্না বাংলানিউজকে বলেন, পাট মানে আর ছালার বস্তা নয়। পাট মানে হাজারো পণ্যের সমাহার। ১৭ বছর ধরে পাটের সঙ্গে আছি। পাটের বাহারি পণ্যের চাহিদা ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে ব্যাপক।
সোমবার (০৭ মার্চ) মেলা ঘুরে দেখা গেছে, পাটের পণ্যের দামও চড়া। যেমন একটা পাটের শাড়ি কিনতে গেলে দাম পড়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। যা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। ঠাকুরগাঁওয়ের ভাই ভাই হ্যান্ডলুম একটি ওয়ালম্যাটের দাম হাঁকছে ৩০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে ঢাকার কোর দি জুটস ওয়ার্কস সমস্ত পাটপণ্য রফতানির লক্ষ্যেই তৈরি করে। স্টল থেকে জানানো হয়, ইউরোপিয়ান, জাপানি ও আমেরিকান ক্রেতাদের জন্য পণ্য তৈরি করা হয়। যেটা বিদেশে চলে না সেটা দেশে বিক্রি করা হয়। এ স্টলে একটি ফ্লোরম্যাটের দাম হাঁকা হচ্ছে ৬০ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ৮০০ টাকা।
মেলায় অধিকাংশ পাটপণ্যের মোড়কে ডলারে মূল্য লেখা আছে। তবে ক্রেতারা ইচ্ছে করলেই পণ্য কিনতে পারছেন না। মনি জুট গুডস অ্যান্ড হ্যান্ডিক্র্যাফটসও বিদেশি ক্রেতাদের জন্য পাট পণ্য তৈরি করে।
স্টলের মালিক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, পাটের তৈরি ব্যাগ থেকে শুরু করে অনেক পণ্যই মধ্যপ্রাচ্যে রফতানি করি। বিশেষ করে নারীদের ব্যবহারের জন্য ফ্যাশন ব্যাগের সৌদি আরবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি ব্যাগ ৭ থেকে ৮ ডলারে বিক্রি করে থাকি।
এক জোড়া পাটের জুতাও বিদেশে ১১ থেকে ১৫ ডলারে বিক্রি করা হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৫৮ টাকা থেকে ১ হাজার ১৭০ টাকা। আর এসব পাটপণ্য তৈরিতে গুরু দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর
** পাটের তৈরি নজরকাড়া সোফা, জুতা-জ্যাকেট
** এ যেন সোনালি আঁশের দুনিয়া
** ডায়বেটিস-ক্যান্সার-হৃদরোগ-আলসার ঠেকাবে পাটের চা