ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে সুশাসন নিশ্চিত করা ও খেলাপি ঋণ আদায় না করে ঋণ পুনঃতফসিল থেকে বিরত থাকার জন্য ব্যাংকটিকে নির্দেশ দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ করা পর্যবেক্ষকের দেওয়া প্রতিবেদনের আলোকে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি রুপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে দেওয়া চিঠিতে এমনটাই জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পেশাগত দক্ষতা ও ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভবিষ্যতে সকল তথ্যাদি যথাসময়ে পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন করতে হবে।
কোন আদায় না থাকা সত্ত্বেও শুধু নন পারফর্মিং লোন কমানোর প্রয়াসে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ থেকে বিরত থাকতে হবে। চিঠি পাওয়ার পর থেকেই এই নির্দেশনা পরিপালন করারও নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার দুর্বলতা রয়েই গেছে। বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনার পরও মূলধন ঘাটতি, খেলাপি ঋণ ও লোকসানি শাখা বেড়েই চলেছে। ব্যাংকটির সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী সব শর্ত যথাযথভাবে পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, ২০১৫ সালে রূপালী ব্যাংক ১৪ হাজার ২৫১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা খেলাপি হয়েছে। খেলাপি ঋণের হার ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২০১৪ সালে এই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ১ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩১৩ কোটি টাকা।
ডিসেম্বর শেষে রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬শ’ ৫০ কোটি টাকা। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঘাটতি পূরণের জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করলেও এখনো টাকা পায়নি। এছাড়াও ব্যাংকটির লোকসানি শাখা রয়েছে ৩৯টি।
অনিয়ম,দুর্বল ব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও সুশাসনের অভাবে ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক পর্যায়ে চলে এসেছে। সার্বিক আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণেই নতুন করে চিঠি দিতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংক আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে নিয়ে এসেছি। ব্যাংকে শতভাগ সুশাসন আছে। কোন ব্যাংকই শতভাগ খেলাপী ঋণ আদায় করতে পারে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
এসই/জেডএম