ঢাকা: ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আব্দুল হামিদকে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যু করা চিঠিতে বলা হয়, ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারায় কেন তাকে অপসারণ করা হবে না, তার জবাব দিতে হবে ৩ মার্চের মধ্যে।
চিঠি পেয়ে আব্দুল হামিদ জবাব দিতে এক মাসের সময় চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাকে ১৩ দিন সময় বাড়িয়ে ১৬ মার্চের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
১৬ মার্চ বুধবার জবাব দেওয়ার সেই সময় শেষ হলেও সৈয়দ আব্দুল হামিদের পক্ষ থেকে কোনো জবাব বাংলাদেশ ব্যাংকে পৌছেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এতথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার হামিদের অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র বলছে, ২০১৫ সালের ৯ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই একছরের জন্য অগ্রণী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ আব্দুল হামিদের পুন:নিয়োগ দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য বিদায়ী গর্ভনর ড. আতিউর রহমান ও সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা ভালোভাবে দেখেননি। গুজবও ছিলো যে কোনো সময় অপসারণ করা হবে অগ্রণীর এমডিকে।
তৎকালীন মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বলেছিলেন, অগ্রণী ব্যাংকের এমডির মেয়াদ বৃদ্ধি বা পুন:নিয়োগের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই।
বিভিন্ন সময় হামিদের অপসারণে উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়নের আগেই পদত্যাগ করেন গর্ভনর ড. আতিউর রহমান।
অগ্রণী ব্যাংক সূত্র জানায়, রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ঘটনায় ১৫ মার্চ আতিউর রহমান পদত্যাগ করায় ১৬ মার্চ নিজে সময় নিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংককে অপসারণের কারণ জানায়নি হামিদ।
ওইদিনই ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেক উচ্ছলতা ও আলোচনা শোনা গেছে, কিছুই হবে না এমডি আব্দুল হামিদের।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক বিরোধিতা করলেও আব্দুল হামিদের পক্ষে রয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
আর ড. আতিউর রহমানের বিদায়ের পর হামিদের অবস্থানের পরিবর্তন হবে। সাবেক আমলা ফজলে কবির নতুন গর্ভনর হওয়ায় টিকে যাবেন হামিদ।
এ কারণেই চলতি বছরের ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময় নিয়েও জবাব দেননি তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে অনিয়মের অভিযোগে সব ব্যাংককেই কারণ দর্শাতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অগ্রণী ব্যাংকের এমডির অপসারণের কারণ জানতে দেওয়া চিঠির জবাব না দেওয়ার বিষয়ে নতুন গভর্নর যোগদানের পরেই সিদ্ধান্ত হবে।
মুন গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৬
জেডএম