ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় জোর তদন্ত শুরু করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অর্থ ছাড়ের নির্দেশনা কারা দিয়েছেন, কোন প্রক্রিয়ায় এই অর্থ ছাড় পেয়েছে, এই অপকর্মের নেপথ্যে আর কারা জড়িত –এসব বিষয়কে মাথায় রেখে এগোচ্ছে তদন্ত।
অর্থ ছাড়ের নির্দেশনা কে কিভাবে দিয়েছে তা খুঁজে বের করতে প্রয়োজনে সুইফট( সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন)-এর সঙ্গে কথা বলবেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। সুইফট নেটওয়ার্কের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে সব যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটার যুক্ত ছিলো তা পরীক্ষা করে দেখবে সিআইডি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সুইফটের নেটওয়ার্ক অক্ষত ছিলো। সুইফটের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ‘হ্যাকড’ হওয়ার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বেলজিয়ামভিত্তিক এই বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানটি । সুইফটের প্রধান নির্বাহী গটফ্রিড লেইব্যান্ডের দাবি, সুইফট তার নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা ও গ্রাহকদের ঝুঁকি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করে থাকে।
সুইফটের প্রধান নির্বাহীর এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, যদি হ্যাকড না হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে? তাই অর্থ ছাড়ের নির্দেশনা কোন প্রক্রিয়ায় হয়েছে সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম সংশ্লিষ্ট বিশেষ পুলিশ সুপার মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টির নিবিড় তদন্তের প্রয়োজনে আমরা সুইফটের সঙ্গে কথা বলবো।
তিনি বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এখনো বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ ও তথ্য বিশ্লেষণের কাজ চলছে। তদন্তের স্বার্থে বিভিন্ন ব্যক্তি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সুইফটের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাড়ে ৩ হাজার কম্পিউটারের সংযোগ ছিলো। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত এসব কম্পউটার সুইফটের সঙ্গে যুক্ত থাকায় হ্যাকাররা তথ্য পাচার করতে কোন সুবিধা পেয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্ত বাংলাদেশে আসেন সুইফটের দু’কর্মকর্তা। তদন্ত শেষে তারা ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে। রিজার্ভ চুরির বিষয়ে চলমান তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুভঙ্কর সাহা বলেন, তদন্ত চলমান। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। তবে মামলার তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৬
এনএ/জেএম