ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেনাপোলে গত অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি ২০৩ কোটি টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
বেনাপোলে গত অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি ২০৩ কোটি টাকা ছবি-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বেনাপোল (যশোর): দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় ৮০ হাজার ৩৬৫ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি কম হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৩ কোটি টাকা রাজস্ব কম ‍আদায় হয়েছে।

তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বছরের শেষ মুহূর্তে এসে লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে তা পূরণ হয়েছে বলে দাবি  করেছে।

বন্দরের আমদানিকারকরা বলছেন, বন্দরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, আমদানি পণ্যে অযৌক্তিক শুল্ককর বৃদ্ধি, শুল্ক ফাঁকি ও সীমান্ত পথে চোরাচারাচালানের ‍কারণে এ ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

আর কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দাবি, সব কিছু নিয়মের মধ্যে হচ্ছে। এতে আগের চেয়ে রাজস্ব আয়ে স্বচ্ছতা বেড়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছর শুরুতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা ঘোষণা দেয়। পরে অর্থবছরের শেষ মুহূর্তে এসে তা পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা করা হয়।

পরে গত ৩০ জুন অর্থবছর শেষে ২ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় দেখিয়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে বলে দাবি করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এরআগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৫৬৭ কোটি। সেসময় একই কারণে পরবর্তীতে কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৪৭২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ওই বছরে ২ হাজার ৫৫৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় দেখানো হয়।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ভারত থেকে ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে। আর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা কমে আমদানি হয় ১২ লাখ ৯৮ হাজার ৯৮৩ মেট্রিক টন পণ্য। আমদানি ঘাটতি হয়েছে গত বছরের তুলনায় ৮০ হাজার ৩৬৫ মেট্রিক টন।

এদিকে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে নিত্য প্রয়োজনীয় আমদানি পণ্যে অস্বাভাবিক হারে শুল্ককর বৃদ্ধিতে আমদানি আরো কমে যাবে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, বাজেটে  কিছু  পণ্য সামগ্রীর ওপর অযৌক্তিক হারে শুল্ককর বৃদ্ধিতে আমদানি বাণিজ্যে আগ্রহ হারাবে ব্যবসায়ীরা। যারা  বাড়তি মূল্যে পণ্য ছাড় করাবেন তারা ক্ষতি পোষাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, সব বন্দরে এক নিয়মে আমদানি পণ্যের শুল্ককর আদায়ের নিয়ম থাকলেও বেনাপোল বন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তারা বেশি মূল্য আদায় করেন। এতে বৈধপথে আমদানি কমে সীমান্ত পথে বাড়ছে চোরাচালান।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার কমার্সের সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, এ পথে বাণিজ্য বাড়াতে ভারত-বাংলাদেশ সরকার আন্তরিক বলে আমরা জানি। এর ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতে আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ইন্টিগেট চেকপোস্ট। যেখানে অত্যাধুনিক সুরক্ষার মধ্যে  থাকবে আমদানি-রফতানি পণ্য।

তিনি আরো জানান, বেনাপোল দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটান চার দেশের বাণিজ্য চুক্তিও বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু  আমদানিকারকরা যদি সুফল না পায় তাহলে সব চুক্তি ভেস্তে যাবে। তাই ব্যবসায়ীদের বৈধ সুযোগ-সুবিধা ও অযৌক্তিক শুল্ককর বৃদ্ধির বিষয়টি রাজস্ব বোর্ডকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অনুরোধ জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার এএফএম আব্দুল্লা খান জানান, তিনি যোগদানের পর থেকে আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ককর আদায়ে স্বচ্ছতা ফিরে এসেছে। এতে আগের তুলনায় রাজস্ব আয় বেড়েছে বলেও দাবি তার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।