ঢাকা: বর্তমানে অনলাইনে বা ই-টেন্ডারিংয়ের ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৬০ টেরাবাইট। এর মাধ্যমে সরকারের সব টেন্ডারিং অনলাইনে করা সম্ভব হবে না।
অনলাইনে টেন্ডারিং সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় অতিরিক্ত অর্থায়ন হিসাবে বিশ্বব্যাংক ৮০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। ‘সেকেন্ড অ্যাডিশনাল ফাইন্যান্সিং অব পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্ম’ প্রজেক্টের আওতায় এ ঋণচুক্তি হয়।
সোমবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব কাজী সফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজেশ্বরী এস পারালকার। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) মহাপরিচালক(অতিরিক্ত সচিব) ফারুক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের লিমিটেড ডাটা স্টোরেজ আছে এর সক্ষমতা মাত্র ৬০ টেরাবাইট। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সমস্ত টেন্ডারিং পদ্ধতি অনলাইনে নিয়ে আসবো। প্রকল্পের আওতায় এ সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ২০০ টেরাবাইট। ফলে অনায়াসে সকল টেন্ডারিং পদ্ধতি অনলাইনে নিয়ে আসবো। সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই আমাদের এ উদ্যোগ’।
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্ম প্রকল্পটি ২০০৭ সাল থেকে ২০১৩ সাল মেয়াদে বিশ্বব্যাংকের ৩৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তায় শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় নতুন ঋণের আওতায় স্টেট অব দ্য ডাটা সেন্টার নির্মিত হবে যার ধারণক্ষমতা হবে ২০০ টেরাবাইট। একটি মিরর সাইট স্থাপিত হবে, যা বর্তমানে অবস্থিত নিম্নমানের ডাটা সেন্টারকে শক্তিশালী করবে। বর্তমান ডাটা সেন্টারের ১৮০ গুণ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হবে যেখানে প্রায় ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন টেন্ডার সংরক্ষণ করা যাবে। এছাড়া ৩ লাখ ২৫ হাজার নিবন্ধিত দরদাতার তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে।
২০১১ সাল থেকে এ প্রকল্পের আওতায় ইলেকট্রিক প্রকিউরমেন্ট শুরু হয় এবং সরকারের অধিক ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্নকারী হিসাবে পরিচিত চারটি সরকারি সংস্থা সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে এর আওতায় আনা সম্ভব হয়। এ প্রকল্পের ফলে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়ন এবং দৃশ্যমান অগ্রগতি যেমন- টেন্ডার প্রক্রিয়ারকরণের সময় ২০১২ সালের ৫১ দিন থেকে ২০১৫ সালে ২৯ দিনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
অতিরিক্ত অর্থায়ন বর্তমান প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন- প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং ইত্যাদিকে সহায়তা করবে, যার মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানে অন্তত একজন প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা-কর্মচারী তৈরি হবে। এ ঋণ সহায়তা বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে নেওয়া হবে, যার সুদের হার শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ঋণটি ৬ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধযোগ্য।
বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজেশ্বরী এস পারালকার বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ সব সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন রোলমডেল। টেন্ডারিং পদ্ধতি অনলাইনে এলে নানা কাজের গতি বাড়বে। এমন কাজে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে পাশে থাকতে পেরে গর্বিত’।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর