সিলেট: ডিসেম্বরেই সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে সদস্যফরম নিয়ে সিলেট চেম্বারে চলছে তুঘলকি কাণ্ড।
অভিযোগ আছে, ফি আদায় করেও দেওয়া হয় না কোনো রিসিপ্ট কপি। আবার অনেকে সদস্য ফরম সংগ্রহ করতে গিয়েও তা না পেয়ে ফিরে আসছেন। চেম্বার সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘনের এসব অভিযোগ তুলেছেন খোদ চেম্বার পরিচালকদের একাংশ।
তাদের অভিযোগ, প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ফরম আনতে গেলে তাদের নানা অজুহাত দেখিয়ে ফরম প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ফরম না দেওয়ার কারণ হিসেবে গঠনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তাদের বলা হচ্ছে, সদস্য সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আরও বলা হচ্ছে, অ্যাসোসিয়েট ছাড়া অর্ডিনারি বা সাধারণ ক্যাটাগরিতে আবেদন করা যাবে না।
ফরম না পেয়ে ফিরে আসাদের একজন হচ্ছেন ব্যবসায়ী আলিমুস সাদাত চৌধুরী। অবশ্য পরে বিষয়টি ব্যবসায়ী মহলে জানাজানি এবং সংবাদ মাধ্যমেও জানানোর পর তিনি ফরম পান।
একাধিক পরিচালকের অভিযোগ, ১৯৯৯-২০০০ সালে বর্তমান সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ সহ-সভাপতি থাকার সময় ভোটার বাড়াতে ৪৬০টি ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ও গজুকাটা ইউনিয়ন থেকে ভোটার বাড়ানোর পাঁয়তারা করা হয়েছিল। তবে সেবার সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরিচালকদের তীব্র আপত্তি ও মামলার মুখে এসকল ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে সদস্য করার প্রক্রিয়াটি শেষমেষ বাতিল করা হয়।
এ প্রসঙ্গে সিলেট চেম্বারের পরিচালক জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীরা সদস্য হতে ফরম পাবেন না, অথচ পরিচালকেরা ২০টি করে ফরম পাবেন? এটা আইনসঙ্গত নয়। এটা চেম্বারের নীতিবহির্ভূত।
সিলেট চেম্বারের পরিচালক শামীম আহমদ রাসেল এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে জানান, তিনিও জানতে পেরেছেন দু’চার জন ব্যবসায়ী সদস্য ফরম সংগ্রহ করতে এসে ফরম না পেয়ে ফিরে গেছেন। আবার এমনও হয়েছে যে, ফরমের টাকা আদায় করা হয়েছে অথচ এর বিপরীতে কোনো রিসিপ্ট দেওয়া হয়নি। কি কারণে এমনটি করা হচ্ছে তা কেবল সভাপতিই বলতে পারবেন। এছাড়া ফরম সংগ্রহের পথে কোনো আপত্তি বা বাধা থাকার তো কথা নয়। ’’
পরিচালকদের জনপ্রতি ২০টি সদস্য ফরম দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘এরমকম হয়ে থাকলে তা আইনসিদ্ধ নয়। আর গত বছর মেম্বারশিপ রিনিউ করা হলো জুলাই মাসে। এ বছর একই মাসে এসে হঠাৎ করে ২৭শ’ সদস্য থেকে সদস্য সংখ্যা কিভাবে এক লাফে কী করে ৫ হাজার হয়ে যায় সেটাও দেখার বিষয়। ’’
সিলেট চেম্বারের আরেক পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান ভুট্টো বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ফরম নিতে হলে ট্রেড লাইসেন্স ও টিআইএন দিয়েই নিতে হয়। একজন প্রস্তাবক ও সমর্থকারী লাগে। বোর্ড মিটিংয়ে যেগুলো সঠিক হয়, সেগুলোকে অনুমতি দেওয়া হয়। ’’
তবে আনীত অভিযোগের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ চেম্বারের ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করতে চায়। ’’
অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট চেম্বার অব কমার্স সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের অনেকে ফরম নিয়ে গেছেন। আর ৫ হাজার সদস্য করার কারণ ও হিসাব আমাদের কাছে আছে। ভোটার বাড়ানোর প্রক্রিয়া হিসেবে এটা করা হচ্ছে, এমন অভিযো্গ সত্য নয়। ’’
পরিচালকপ্রতি ২০টি করে ফরম দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, ‘‘গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী কিছু হলে লিখুন। তবে কারো মুখের কথা শুনে নয়। ’’
এ বিষয়ে তার অফিসে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৬
এনইউ/জেএম