ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মানহীন পণ্যে গ্রাহকের পকেট কাটছে আগোরা

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
মানহীন পণ্যে গ্রাহকের পকেট কাটছে আগোরা ছবি: শাকিল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: লোভনীয়, প্রয়োজনীয় নানা পণ্যের পসার সাজিয়ে গুলশান অভিজাত এলাকায় ব্যবসা করে গ্রাহকের পকেট কাটছে চেইন শপ আগোরা। অথচ পণ্যের মান নিয়ে গ্রাহকদেরই রয়েছে নানা প্রশ্ন, আপত্তি।

কোন পণ্য কবেকার, তা জানার উপায় না থাকায় গ্রাহকদের রয়েছে তীব্র ক্ষোভ।

এ নিয়ে গুলশানে আগোরার বিক্রয়কর্মীদের কাছ থেকে সদুত্তর না পেলেও এক ছাদের নিচে নিত্যপণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে গ্রাহক।

নিত্যপণ্যের মান নিয়ে প্রশ্নের মুখে থাকা আগোরার গুলশান-২ নম্বর সার্কেলের কাছের শাখায় বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে প্রথমেই ছবি তুলতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। পরে কথা হয় গ্রাহক, বিক্রয়কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের সঙ্গে। কিন্তু পণ্যের মান নিয়ে আগোরা থেকে মেলেনি অনেক প্রশ্নের উত্তর।
 
পণ্যের মান কেমন- বাজার করতে আসা স্থানীয় এক বাসিন্দার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কীভাবে বুঝবো? বলে তো টাটকা, কিন্তু বোঝার উপায় নেই।
 
তিনি বলেন, এই এলাকার মানুষের সময় কম, সবাই কাজে ব্যস্ত, দেখে-শুনে বাজার করার সময় কই? তাই এক ছাদের নিচে বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে নিত্যপণ্য।
 
এই গ্রাহকের কথায় প্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে থাকা কর্মীদের কাছে পণ্যের তালিকা চেয়ে পাওয়া যায়নি। প্রবেশপথে থাকা এক নারী কর্মী জানান, এখনও তালিকা আসেনি। কখন পাওয়া যাবে তালিকা, তা জানাতে পারেননি তিনি।
 
আগোরায় পণ্যের মূল্য নিয়েও গ্রাহকরা সবসময় ধোঁয়াশায় থাকেন। অনেক পণ্যের উপর ‘বিগ সেভার’ অফার লেখা থাকলেও এ নিয়ে বিক্রয়কর্মীদের কাছে সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

দেশি মুরগি, গরুর মাংস, ইলিশ মাছে ‘বিগ সেভার’ লেখা থাকলে তার কারণ জানা নিয়ে নিজেরাই ধোঁয়াশায় তারা।
ইলিশ মাছে ‘বিগ সেভার’ দিয়ে ৮১ টাকা কমে ৪৬৯ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, সাপ্লাইয়ার পাল্টেছে, তাই দাম কমেছে। অথচ একই পণ্যে এই অফার নিয়ে প্রশ্ন গ্রাহকদের।
 
এ প্রসঙ্গে একজন নারী গ্রাহক বলেন, বিক্রি বাড়াতে অফার দিয়েছে। আসলে বাজার মূল্যের থেকে বেশি ধরে ছাড় দিয়ে কৌশলে পকেট কাটছে আগোরা।
পণ্যের মান ও দর-দামের তফাত নিয়ে আগোরা গুলশান-২ শাখার ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা বদরুল আলম দাবি করেন, নির্দিষ্ট সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে আমাদের পণ্য আসে। তবে দামের হেরফের কেন- জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পরেননি।

অথচ কর্মকর্তাই ছবি তুলতে বাধা দেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পরবর্তীতে ছবি তুলতে দিলেও সঙ্গে ছিলেন সবসময়।

বর্তমানে আরএম সেন্টারে ব্যবসা করা আগোরা দেড় বছর আগে গুলশানে পিংক সিটি থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। এ প্রসঙ্গে পিংক সিটির সামনের একজন নিরাপত্তা কর্মী বাংলানিউজকে বলেন, লোকসান, শুধুই লোকাসান। বিদায় না নেবে তো কি লোকসান দেবে?

একজন গ্রাহক বলেন, সুপার শপ মানেই ভেজাল। দেখার কেউ নেই। ভেজাল ধরে, কিছু দিন আসা বন্ধ থাকে, আবারও আসি।

সুপার শপের বিরুদ্ধে পণ্যের মান নিয়ে এরআগে জরিমানা গুনতে হলেও মার্কেট ভবনের পিছনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছিল পণ্য খালাস। পয়ঃনিষ্কাশন নালার উপর কর্মীরা পণ্য খালাস করছিলেন কাচঘরে বিক্রির জন্যই।

একজন সাপ্লাইয়ারের সঙ্গে সেখানে পণ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা বলেননি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
এমআইএইচ/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।