ঢাকা: স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশ দেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে চীন সরকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক কোনো সম্পর্ক ছিল না। এমনকি ১৯৮০ সাল পর্যন্তও চীনের সঙ্গে তেমনভাবে অর্থনৈতিক সুসস্পর্ক ছিল না।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, ২২ আগস্ট বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের ১৪তম সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় ইআরডি, সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেবেন।
চীনা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সেদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী গাও ইয়ান (Gao Yan)। বৈঠকে ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় ইআরডি।
ইআরডি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ২২ আগস্ট বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের ১৪তম সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বাংলাদেশ-চীন সরকারের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে।
ইআরডি সূত্র আরও জানায়, চীনের ঋণ বাস্তবায়নের জন্য ছয়টি প্রকল্পের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মেরিন ড্রাইভ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে ২৮ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, প্রি পেমেন্ট মিটারিং প্রকল্পে ৫ কোটি ২১ লাখ ডলার, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে মিটার গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ১৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের একটি ঋণচুক্তি হতে পারে।
সম্প্রসারণ ও মংলা বন্দর সুবিধা প্রকল্পে ২ কোটি ৪৯ মিলিয়ন ডলার, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে সম্প্রসারণের আধুনিকায়ন প্রকল্পে ২ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের একটি ঋণচুক্তি হতে পারে। এছাড়া গজারিয়ায় ৩৫০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক থার্মেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দেবে চীন।
সব মিলিয়ে ছয়টি প্রকল্পে ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিতে যাচ্ছে চীন। প্রতি ডলারে বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭৮ টাকা ধরলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এছাড়াও বর্তমানে পদ্মা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং ইনফো সরকার প্রকল্প চীন সরকারের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সময় যতো গড়াচ্ছে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আর্থিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। ইআরডি থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ১৯৮৫ সাল থেকে মূলত চীনের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। ২০১৫ সাল পর্যন্ত চীন সরকারের ঋণ ও অনুদানের মোট প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ১৩ কোটি ২৪ লাখ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১১ কোটি ১০ লাখ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ে চীন অর্থছাড় করেছে ১০ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার। সাধারণ চায়নার এক্সিম ব্যাংককের সঙ্গে ঋণচুক্তি হয়ে থাকে। এসব ঋণে ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশ সরকারকে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৬
এমআইএস/এসএইচ