ঢাকা: ঋণ প্রস্তাব পাশ করাতে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে পর্ষদ সভায় হট্টগোল সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের পক্ষে-বিপক্ষের পরিচালকদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছে।
চলতি বছরের ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ১০০৬ তম পর্ষদ সভায় এ ঘটনা ঘটে। সভায় উপস্থিত একাধিক পরিচালক বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী রাকিব এন্টারপ্রাইজকে ব্যাংকের ঢাকার স্থানীয় কার্যালয় থেকে ছয় কোটি টাকা ঋণ প্রদানের প্রস্তাব চলতি বছরের ৮ আগস্টের পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করা হয়। তবে প্রকল্প ঋণ প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ঢাকার পরিবর্তে চট্টগ্রামের কোন শাখার মাধ্যমে এই ঋণ প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ করে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বৈঠকে।
তারপরও চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন রাকিব এন্টারপ্রাইজের ঋণ প্রস্তাবটি চট্টগ্রামের কোনো শাখায় না পাঠাননি। বরং ঢাকার স্থানীয় শাখা থেকে পাঠানো পূর্বের ঋণ প্রস্তাবটি ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবারের) পরবর্তী পর্ষদ সভার এজেন্ডাভুক্ত করেন তিনি।
তবে এই ঋণ আবেদনের কোন কাগজের সঙ্গে এর যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন না থাকায় বোর্ডের একাধিক সদস্য এতে আপত্তি তোলেন। পরে চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পুরোপুরি জানেন দাবি করে ঋণ প্রস্তাবটি পাস করতে পরিচালকদের চাপ দেন।
এতে কয়েকজন পরিচালক বিরোধিতা করলে চেয়ারম্যান তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ সময় পরিচালকরা প্রশ্ন তোলেন, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান ঢাকায় কেন আবেদন করেছে। তারা এটা চট্টগ্রামের কোনো শাখায় করতে পারতো। আর প্রতিষ্ঠানটি যেসব কাগজপত্র জমা দিয়েছে তার সত্যতা যাচাই না করে এ প্রস্তাব পর্ষদ সভায় ওঠানো হলো কেন?
চেয়ারম্যান এ সব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে না পারলেও রাকিব এন্টারপ্রাইজের পক্ষে নথিপত্র দেখেছেন বলে পরিচালকদের জানান। এ সময় পরিচালকরা ব্যাংকের প্রতিবেদন যাচাই না করে কোনো প্রকল্পে অর্থায়ন করা ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে প্রস্তাবটি পাস না করার পক্ষে মত দেন।
এতে চেয়ারম্যানের পক্ষে থাকা দুই তিনজন পরিচালকের সঙ্গে অন্য পরিচালকদের তুমুল বাক-বিতণ্ডা হয়।
এ সময় ঋণ প্রস্তাবের বিরোধিতাকারী কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন আমলা সুলভ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করায় বাক বিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পরিচালক বলেন, তাদের একজন পরিচালক আরেকজনের কলার ধরতে উদ্যত হন। পরে অন্যরা বাধা দেন।
মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, রাকিব এন্টারপ্রাইজ চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার স্থানীয় শাখায় ঋণ আবেদন করায় কয়েকজন পরিচালক তা চট্টগ্রামের কোনো শাখায় করার জন্য বলেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৬
এসই/আরআই