দিনাজপুর: দিনাজপুরে হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। পাইকারি বাজারে গত ১৫ দিনে বস্তা প্রতি চালের দাম বেড়েছে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা।
খুচরা বাজারে কেজিতে বেড়েছে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। এছাড়া সুগন্ধি চালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা। তবে অনান্য চালের চেয়ে মোটা চালের দাম বেশি হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে দিনমজুরদের।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কৃষকদের কাছ থেকে অল্প দামে ধান কিনে মিল মালিক ও মজুতদাররা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছেন।
আর মিল মালিকরা বলছেন এ বছর উৎপাদন কম ও পার্শ্ববর্তী বন্যা দুর্গতো এলাকাগুলোতে চাল পাঠিয়ে মজুদ কমে যাওয়ার কারণেই বেড়েছে চালের দাম।
জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে দিনাজপুরের পাইকারি বাজারগুলোতে পঞ্চাশ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা মোটা চাল বিক্রি হয় ১ হাজার টাকা যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫শ’ টাকা এছাড়া
মিনিকেট ২ হাজার টাকা বিক্রি হতো যা বর্তমানে ২ হাজার ৩শ’ টাকা, বিআর-২৮- ১ হাজার ৭শ’ টাকা যা
বর্তমানে ১ হাজার ৮শ’ টাকা ও বিআর-২৯- ১ হাজার ৭শ’ টাকা যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮৫০ টাকা।
সুগন্ধি চালের মধ্যে কাটারি ভোগ আগে বিক্রি হতো ৬০ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে, আর ৬৫ টাকার জিরা কাটারি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে।
চাল কিনতে আসা রোস্তম আলী জানান, ১৫ থেকে ২০ দিন আগে যে চাল ৩০ থেকে ৩১ টাকা কেজি ছিল এখন সে চাল ৩৪ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দিনমজুরি করে তার সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
দিনাজপুর বাহাদুর বাজারে চাল কিনতে আসা দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সব ধরনের চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। এই খাদ্য দ্রব্যটির দাম সবসময় স্বাভাবিক রাখা উচিৎ। কিন্তু হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চাল কিনতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে, অন্য সামগ্রী কেনাই কষ্টকর।
দিনমজুর রং মিস্ত্রি ইব্রাহিম বলেন, এখন কাজের মন্দা মৌসুম চলছে, কাজ না থাকায় ঘরে বসেই থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থায় হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের আহার জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
দিনাজপুর এমকে টেডার্সের স্বত্বাধিকারী ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন, চালের দাম বেশি হলে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ে ব্যবসায় দেখা দেয় মন্দাভাব। মিল মালিক ও মজুতদারদের কাছ থেকে চাল কিনে বাজারে বিক্রি করতে হয়। দাম বাড়লে পুঁজিও বাড়াতে হয়।
তিনি জানান, মিল মালিক ও মজুতদাররা যখন কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনে তখন দাম খুবই কম থাকে। আর যখন কৃষকের ধান শেষ হয়ে যায় ঠিক তখনি মিল মালিক ও মজুতদাররা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয়।
দিনাজপুর চালকল মালিক গ্রুপের সদস্য নুরুজ্জামান সরকার বাংলানিউজকে জানান, গত মৌসুমে উৎপাদন কম ও বর্ন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণের চাল পাঠানোর কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৬
আরএ