ঢাকা: বর্তমানে প্রতিকেজি প্যাকেট লবণ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়।
এদিকে বাজার সামাল দিতে এবছরের ১৪ আগস্ট দেড় লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
এরমধ্যে ৭৫ হাজার টন শিল্প লবণ ও ৭৫ হাজার টন ভোজ্যলবণ। আগে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে মিলগুলোকে সমহারে লবণ আনার অনুমতি দেয়া হতো। কিন্তু এবার শিল্প লবণ নাম দিয়ে আমদানিতে আরেকটি কোটা সৃষ্টি করা হয়েছে। নতুন কোটায় শিল্প লবণের নামে একটি সিন্ডিকেট লবণের বিশেষ বরাদ্দ নেয়ার পাঁয়তারা করছে।
অভিযোগ রয়েছে, ওই সিন্ডিকেট বরাদ্দ দেওয়ায় এ শিল্পের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশের সব মিলগুলোকে সমহারে লবণ আমদানি বণ্টন করা হলে ২০টাকা কেজিতে লবণ দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ আমদানিকারক।
পূবালী, মোল্লা ও এসিআই মূলত ভোজ্যলবণ আমদানিকারক। কিন্তু শিল্প লবণের অজুহাতে লবণ বরাদ্দের ক্ষেত্রে তারাও সুবিধা নেয়ার পাঁয়তারা করছে।
বিশেষ করে পূবালী সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজকে ২ হাজার ২২২ মেট্রিকটন লবণ বৈধতা দেয়ার চেষ্টা চলছে। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে পরিমাণ লবণ দেশে মজুদ রয়েছে, তা দিয়ে সুপার লবণ ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা আর সম্ভব নয়। আগে অপরিশোধিত লবণ ৭ থেকে ৮ টাকা কেজি ছিল। বর্তমানে তা ১৪ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম অঞ্চল লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সুপারিশকৃত আমদানিকারকদের সমাহারের লবণ আমদানির সুযোগ দিলে ২০টাকা দরে ভোজ্য লবণ বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু গুটিকয়েক মিলমালিক শিল্প লবণ নাম দিয়ে আমদানির সুযোগ করে দিলে ভবিষ্যতে ৬০ টাকায়ও লবণ মিলবে না। ভোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে আমদানিকারকদের সমান সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
জানা গেছে, কোরবানি ঈদে পশুর চামড়া সংরক্ষেণের জন্য লবণের চাহিদা বাড়ে। আগামী সপ্তাহ থেকে চামড়া সংরক্ষণের জন্য বাড়তি লবণ কিনবেন ট্যানারি মালিক ও চামড়া ব্যবসায়ীরা। এখন যদি দাম বাড়ানো হয় তাহলে বিপাকে পড়বেন তারা।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, মূলত প্রকৃত উদ্যোক্তা ও মিল মালিকদের আমদানির সুযোগ দেওয়ার জন্য নতুন করে এ নিয়ম করা হয়েছে। এতে যারা এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত শুধু তারাই আমদানির সুয়োগ পাবেন।
তিনি বলেন, লবণ নিয়ে কারসাজি বন্ধেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে কোন সিন্ডিকেট কারসাজির করার সুযোগ পাবে না। লবণ নিয়ে কোনো কেলেঙ্কারি হতে দেওয়া হবে না। তবে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা যাতে না ঠকেন সেই বিষয়টিও লক্ষ্য রাখা হবে। বিষয়টি দেখভালের জন্য একটি কমিটিও করা হয়েছে।
জানা গেছে, শিল্প ও ভোজ্য লবণ সব সময় একই এইচকোডে আমদানির সুযোগ দেয়া হতো। দেশে আনার পর আমদানিকৃত ক্রুড বা বোল্ডার লবণ পরিশাধিত করার পর আয়রন মিশিয়ে তা ভোজ্য লবণে পরিণত করা হয়। কিন্তু এবার প্রথমবারের মতো শিল্প লবণ নাম দিয়ে আমদানির নতুন কোটা তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৬
এসই/এসএইচ