ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রাহকবান্ধব ইউএসএসডি’র মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৭
গ্রাহকবান্ধব ইউএসএসডি’র মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার

ঢাকা: মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানে আনস্ট্রাকচার্ড সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস ডাটা’র (ইউএসএসডি) মূল্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহারকারী দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের আর্থিক সক্ষমতাকে বিবেচনায় রেখে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে বুধবার (১৯ এপ্রিল) মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।

মোবাইল অপারেটরদের ইউএসএসডি চ্যানেল ব্যবহার করে আর্থিক সেবা দেয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

এজন্য তাদের আয়ের ৭ শতাংশ ভাগাভাগি করে অপারেটরদের সঙ্গে। আর সংশ্লিষ্ট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানটি পায় ১৩-১৬ শতাংশ। আয়ের বাকি ৮০ শতাংশই পান মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী এজেন্ট ও পরিবেশকরা।
 
মোবাইল ফোন অপারেটররা বর্তমানে যে ৭ শতাংশ টাকা পায়, তারা সেই পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে নিতে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর অভিযোগ, তারা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় বিনামূল্যেই সেবা দিচ্ছে।
 
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশ বিশেষ করে কেনিয়া ও ভারতের মতো দেশগুলোতে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকে বেগবান করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউএসএসডি’র মূল্য কমাতে মোবাইল অপারেটরদের বাধ্য করছে। সেখানে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন অপারেটররা এ খাত থেকে আরও বেশি আয় করার কৌশল নিয়েছে।
 
মোবাইল অপারেটরগুলো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে এতোদিন ৭ শতাংশ অর্থ চার্জ করলেও নতুন প্রস্তাবনায় সেশন ভিত্তিতে অর্থ আদায়ের পরিকল্পনা নিয়েছে। এতে প্রতি ৯০ সেকেন্ডকে সেশন ধরে সেশনপ্রতি ভ্যাট ছাড়া ১ টাকা ৫০ পয়সা ও প্রতিটি এসএমএসের জন্য ২০ পয়সা চার্জ করতে চায়।

এ প্রক্রিয়ায় গ্রাহকরা টাকা পাঠাতে চাইলে তাদের খরচ এখনকার চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে। এতে লাখ লাখ মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহক, যাদের বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের, তারা টাকা পাঠাতে আগ্রহ হারাবেন। ফলে বাধাগ্রস্ত হবে সরকারের আর্থিক অন্তর্ভূক্তি কর্মসূচি।

পরিস্থিতি অনুধাবন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে ইউএসএসডি’র একটি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে।
 
২০১১ সালে মোবাইল ব্যাংকিং চালুর উদ্দেশ্য ছিল, দেশের দরিদ্র ও ব্যাংক বহির্ভূত জনগোষ্ঠীকে একটি আর্থিক অন্তর্ভূক্তির আওতায় নিয়ে আসা। ইউএসএসডি চ্যানেলের সুবিধা নিয়ে কম দামের মোবাইল সেট ব্যবহার করেও গ্রাহকরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা উপভোগ করতে পারছেন। বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সাফল্য দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।
 
 
বাংলাদেশ ব্যাংক ২৮টি ব্যাংককে মোবাইল ব্যাংকিং চালুর অনুমোদন দিলেও বর্তমানে ১৮টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফেব্রুয়ারি মাসের পরিসংখ্যান অনুসারে, বর্তমানে নিবন্ধিত মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা ৪ কোটি ৯৮ লাখ। এর মাধ্যমে গ্রাহককে টাকা পাঠাতে বর্তমানে প্রতি ১০০ টাকায় খরচ করতে হয় ১ দশমিক ৮৫ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৭
এসই/জেডএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।