ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৈদেশিক ঋণে ঝুঁকির আশঙ্কা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
বৈদেশিক ঋণে ঝুঁকির আশঙ্কা বাংলাদেশ ইনিষ্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের কর্মশালা

ঢাকা: ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে স্বল্প মেয়াদি বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৬ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে এর পরিমাণ ছিল ৩৮ কোটি ডলার। ২০১২ সালে ছিল মাত্র সাড়ে ২৩ কোটি ডলার। স্বল্প মেয়াদি এ ঋণের প্রবৃদ্ধির হার ৩১ শতাংশের বেশি। যা আগামী দিনে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিষ্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ অব শর্ট টার্ম ফরেন কারেন্সি ফিন্যান্সিং অব ব্যাংকস’ শীর্ষক কর্মশালায় এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।  

বিআইবিএম’র অধ্যাপক ড. শাহ মো. আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি টিম গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, স্বল্প মেয়াদি এসব ঋণের বিষয়ে নজরদারির অভাব রয়েছে। এ সুযোগে বিশেষ থেকে আনা এসব অর্থের অপব্যবহারও হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে দেশ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে একটি নীতিমালার আওতায় এ ধরনের ঋণের নজরদারি করতে হবে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।  তিনি বলেন, দেশের মধ্যে যখন উচ্চ সুদহার ছিল। তখন বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নেয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই সময়ে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার ছিল ১৭ থেকে ১৭ শতাংশ। এখন তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণের সঙ্গে দেশীয় ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহারের তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

ডেপুটি গভর্নর আরও বলেন, দেশের তুলনায় বিদেশি ঋণের সুদহার তুলনামূলক সস্তা হলেও সীমাহীন ঋণের অনুমোদন দেওয়া হবে না। কেননা পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। এজন্য বিষয়টি নিয়ে ভাববার প্রয়োজন রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে বিআইবিএম’র মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধূরী বলেন, স্বল্প মেয়াদি বৈদেশিক ঋণের ভালো দিকের পাশাপাশি বেশ কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। বৈশ্বিক চিন্তা করি, তাহলে আগে যতোগুলো আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে সেখানে দেখা গেছে, স্বল্প মেয়াদি ঋণ কম খরচে বড় করা হয়। বড় করে যখন ফিরিয়ে দেয়ার সময় হতো তখন যদি লোকাল কারেন্সি অবমূল্যায়ন করে তখন ব্যালেন্স অব পেমেন্টে সমস্যা দেখা দেয়। তাই বাংলাদেশে এ ধরনের সমস্যায় না পড়তে হয় সেদিকটি বিবেচনা করতে হবে।

তিনি বলেন, অবসর ব্যাংকিংয়ের সোর্সেস অব ফান্ডের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংককে সবসময় মনিটরিং করা উচিত। প্রত্যেকটি ব্যাংকের ফরেন কারেন্সির দায় বেড়ে যাচ্ছে। যদিও বর্তমান অবস্থান এখনো সংকট পর্যায়ে পৌঁছায়নি। কিন্তু,  ক্রাইসিস সেশন টাচ করার পরে কি আমরা পদক্ষেপ নিবো, নাকি তার আগেই ব্যাংকগুলোকে নিভৃত করবো, যাতে সংকট তৈরি না করে সেজন্য একটা শক্ত মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএম’র সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, মালেয়েশিয়া স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণ  নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ধরণের ঋণে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে যেসব ঝুঁকি রয়েছে তা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবস্থা নিতে হবে।

কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন বিআইবিএম’র অনুষদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ বারিকুল্লাহ, ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব উল আলম, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আহমেদ শাহিন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।