ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ দিলদার আহমেদ (ফাইল ফটো)

ঢাকা: আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে জব্দকরা স্বর্ণ, ডায়মন্ড, টাকা এবং ডলার কেন রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হবে না কিংবা তার বিরুদ্ধ কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ঢাকা কাস্টমস।

নোটিশ প্রাপ্তির ২০দিনের মধ্যে এর জবাব দিতে হবে অন্যথায় আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ বাজেয়াপ্ত ও মানি লন্ডারিং আইনে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে। ঢাকা কাস্টমস হাউসের নির্ভরশীল একটি সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছে।

দিলদারের বিরুদ্ধে জারি করা কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, একজন যাত্রী বিদেশ হতে আসার সময় যাত্রী ব্যাগেজ বিধিমালা ২০১২ ও ২০১৬ এর বিধি ৩ (১০) অনুযায়ী যথাক্রমে ২শ গ্রাম বা ২৩৪ গ্রাম স্বর্ণবার ঘোষণা দিয়ে শুল্ককরাদি পরিশোধ সাপেক্ষে আনতে পারেন। কিন্তু আপন জুয়েলার্স বিভিন্ন যাত্রীর কাছ থেকে যাত্রীর নামে শুল্ককরাদি পরিশোধিত স্বর্ণ/ডায়মন্ড ক্রয় করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু যাত্রীর নামে ইস্যুকৃত ব্যাগেজ রিসিপ্ট দাখিল করলেও শোরুমে রক্ষিত কোনো রেজিস্টার বা দালিলিক প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আটককৃত স্বর্ণ ও ডায়মন্ড আমদানি পর্যায়ে প্রযোজ্য শুল্ক করাদি ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে স্বর্ণ ও ডায়মন্ড আনা হয়েছে যা চোরাচালান হিসেবে বিবেচ্য বলে কাস্টমস মনে করছে।

এদিকে আপন জুয়েলার্সের ৫টি শোরুমের স্বর্ণ, ডায়মন্ড ও নগদ অর্থ ১৪ ও ১৫ মে অভিযান চালিয়ে প্রাথমিকভাবে জব্দ করে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষের জিম্মায় রাখে শুল্ক গোয়েন্দা। এরপর কয়েকবার সাময়িক জব্দকৃত স্বর্ণ, ডায়মন্ড ও অর্থের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে সময় দেওয়া হলেও আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ শুল্ক গোয়েন্দার কাছে কোনো বৈধ কাজগপত্র দেখাতে পারেননি। যার কারণে রোববার (৪জুন) রাত ৯টার দিকে জব্দকৃত স্বর্ণ, ডায়মন্ড ও নগদ অর্থ স্থায়ীভাবে আটক করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা।

অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ, ডায়মন্ড ও নগদ অর্থ জমা দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে ঢাকা কাস্টম হাউজে শুল্ক ফাঁকির অপরাধে আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের বিরুদ্ধে ৫টি বিভাগীয় মামলা দায়ের করে শুল্ক গোয়েন্দা। এর মধ্যে মালিক দিলদার আহমেদের নামে ৩টা, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের নামে ১টা করে মামলা করা হয়।   যে মামলায় বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার প্রকাশ দেওয়ান।

এছাড়া জব্দকৃত স্বর্ণের বিষয়ে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ একাধিকবার বাংলানিউজকে বলেছেন, ‍জব্দকৃত সব স্বর্ণ বৈধ। তার কোনো অবৈধ স্বর্ণ নেই। দীর্ঘ ৪০টি বছর ধরে তিনি সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছেন। ফলে তার দোকানের স্বর্ণ যদি অবৈধ হয় তাহলে বাংলাদেশে কারও স্বর্ণ বৈধ নয় এবং এই সমস্যা সমাধানে তিনি সরকার ও শুল্ক গোয়েন্দার সহায়তা চান। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এক রতি স্বর্ণেরও বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি আপন জুয়েলার্স।

কারণ দর্শানোর নোটিশ সম্পর্কে জানতে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে দিলদার আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নোটিশ পাওয়া বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। বড় ভাই (গুলজার আহমেদ) বলতে পারবে।

এ বিষয়ে ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার প্রকাশ দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, আপন জুয়েলার্সের মালিকদের বিরুদ্ধে শুল্ক গোয়েন্দার দায়ের করা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আর সেই বিচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ফলে আইনানুগভাবেই এখন পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপন জুয়েলার্সের ৫টি শোরুমে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১৪ মণ স্বর্ণ, ১০ কোটি টাকার ডায়মন্ড, নগদ ৬৭ লাখ ৪০ হাজার ৩১২ টাকা ও ১শ মার্কিন ডলার জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৭
এসজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।