ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ময়মনসিংহের নতুন বাজারের মাংস ফ্রেশ, দাম বেশি

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
ময়মনসিংহের নতুন বাজারের মাংস ফ্রেশ, দাম বেশি ময়মনসিংহের নতুন বাজারে মাংসের দোকান/ ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: মাছের ট্রেগুলো ফাঁকা। মাছ ব্যবসায়ী নেই। ক্রেতাও যেন প্রায় শূন্যের কোঠায়। এমন চিত্রের বিপরীতে এখানকার মাংস বিক্রেতারা হাত গুটিয়ে বসে নেই মোটেও। হাতেগোনা দু’একজন ক্রেতা আসছেন, ঢুঁ মারছেন মাংস ব্যবসায়ীদের চৌহুদ্দিতে।

মাছের বাজারের ঠিক উল্টো দিকেই গরুর মাংস কাটা-বাছাইয়ের কাজ করছিলেন ছনু কোরায়শী। তার দোকানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ ১০ টাকা কেজিতে।

নগরীর নতুন বাজারে প্রায় এক যুগ যাবত গরুর মাংসের ব্যবসা করেন ছনু। নগরীর মেছুয়া বাজারে যেখানে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫’শ টাকা কেজিতে সেখানে কেন এখানকার বাজারের মাংসের দাম ১০টাকা বেশি। কৌতূহলী হয়ে জানতে চাওয়া হলো তার কাছে।  

কোন রাখঢাক না রেখেই বলতে থাকলেন, “আমরা ষাঁড় গরু ও গাই গরুর মাংস মিক্সড করে বিক্রি করি না। এ কারণেই ওদের চেয়ে আমাদের বাজারে গরুর মাংসের দাম কয়েক টাকা বেশি। আমরা ওজনেও ঠকাই না। একদম ফ্রেশ মাংস বিক্রি করি। আমাদের বাজারের গরুর মাংসের সুনাম আছে। ”

শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে ছনুর সঙ্গে আলাপ হচ্ছিলো। পাশের দোকানের মাংস বিক্রেতা মোক্তার হোসেন তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বললেন, নতুন বাজারের মাংস আর মেছুয়া বাজারের গরুর মাংস এক না। আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। ওদের মাংসের সঙ্গে তেল-চর্বি-পর্দা মিশিয়ে দেওয়া হয়। আমরা কয়েক টাকা বেশি দাম নিলেও ক্রেতার সঙ্গে এমন প্রতারণা করি না।  
ময়মনসিংহের সবজির বাজার/ ছবি: অনিক খান
নগরীর অন্যতম বৃহৎ নতুন বাজার মূলত জমে উঠে বিকেলের পর। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা অবধি এখানে পা ফেলারও জো’ থাকে না। যাদের খরচে হাত আর একটু ভাল মানের মাছ-মাংস কিনেন তারাই মূলত এ বাজারে আসেন, বলছিলেন মিন্টু নামের আরেক মাংস ব্যবসায়ী।  

এ বাজারের অন্যান্য মাছ ব্যবসায়ীরা এ সময়টাতে বিশ্রামে থাকলেও আসাদুল (৩৫) এদিন একটু আগেভাগেই চলে এসেছেন বাজারে। তার আড়তে রয়েছে বিভিন্ন আকারের ইলিশ। প্রথমে ক্রেতা মনে করে দরদাম ফুরাতে মিন্টু ব্যস্ত হয়ে উঠলেও মিডিয়া কর্মী পরিচয় শুনতেই যেন খানিকটা হতাশ হলেন।  

‘ভাই, মাছ বিক্রি করতে না পারলে মাঁচা থেকে বের করতে পারবো না। শুধু ছবি তুললেই তো আমার পেট ভরবো না। বিকালে আইসেন। তখন ইচ্ছামতো ছবি তুলতে পারবাইন’ একদমে গজর গজর ভঙ্গিতে বলছিলেন মিন্টু।  

আলাপ চলাকালেই আসাদুল আরেকজনের কাছে ৩ কেজি ওজনের ইলিশের দাম হাঁকলেন ২ হাজার ৮’শ টাকা। দামে বনিবনা না হওয়ায় আরে মাঁচা থেকে রূপালী ইলিশ বের করলেন না আসাদুল।  

এ বাজারে এ সময়টাতে হাতেগোনা কয়েকটি সবজির দোকান চোখে পড়লো। তাদের মাঝে অন্যতম হলেন আবুল হাসিম। তার ছোট্ট সবজির দোকানে ঢেঁড়শ, কাঁচামরিচ, লাল শাকসহ কয়েক পদের সবজির সমাহার দেখা গেলো।  

হাসিম জানালেন, সকালের দিকে এ বাজার ড্যাম থাকে। বিকেলের পর জমে উঠে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকালে আশাতীত বিক্রি বাট্টা না হওয়ায় হতাশার রাজ্যেই যেন বার বার ডুবে যাচ্ছিলেন এ ক্ষুদে ব্যবসায়ী। গজর গজর ভঙ্গিতে বলছিলেন, ‘বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দোকান পেতেছি। কিন্তু বাজারে তো ক্রেতার আকাল তৈরি হয়েছে। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭ 
এমএএএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।