ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কুড়িগ্রামে সবজির মূল্য বেড়েছে দ্বিগুণ

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
কুড়িগ্রামে সবজির মূল্য বেড়েছে দ্বিগুণ কুড়িগ্রামের কাঁচাবাজার

কুড়িগ্রাম: দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ায় সরবরাহ কম থাকায় ঝাঁঝ বেড়েছে কাঁচা মরিচে। সেইসাথে মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে সবজির দাম। পাইকারি বাজারে চালের দাম অনেকটা স্থীতিশীল থাকলেও বেড়েছে খুঁচরা বাজারে। তবে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন চালের পাইকারি দর বেশি থাকায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম হয়েছে দিগুণ। ভারতে পেঁয়াজের দাম বেশি এবং কুড়িগ্রামের বাজারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রাম শহরের একমাত্র পাইকারি বাজার শহীদ জিয়া বাজারে কেনা-বেচা শুরু হয়েছে মূলত সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। সবজির আমদানি ছিলো অত্যন্ত কম, তাই দামও ছিলো চড়া। তবে কাঁচা শাক-সবজি পাইকারি বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়েছে খুচরা বাজারে।

কাঁচা মরিচ পাইকারি দর ৯৫ টাকা হলেও খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৪০/১৫০ টাকা দরে। যা ১০/১২ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৫/৪০ টাকা দরে।

পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন সবজির দাম বেড়ে হয়েছে দিগুণ। করলা ২০ টাকার স্থলে ৪০ টাকা, বেগুন ১৫ টাকার স্থলে ৩০ টাকা, পটল ১৪ টাকার স্থলে ৩০ টাকা, ঢেড়স ১৫ টাকার স্থলে ৪০ টাকা, পেপে ১২ টাকার স্থলে ২২ টাকা, কচু ১২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে- করলা ৬০ টাকা, বেগুন ৪৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪৫ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, কচু ২৪ টাকা।

পাইকারি বাজারে ভারতের এলসির পেঁয়াজ ৪০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ৫০ ও ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে গত একমাস ধরে অনেকটা একই রকম চালের দর চলছে।  

পাইকারি এলসি স্বর্ণা ৪০ টাকা ৫০ পয়সা হলেও খুচরা বাজারে ৪৪/৪৫ টাকা, ইরি-২৮ নতুন ৪২ টাকার স্থলে ৪৬ টাকা, ইরি-২৮ পুরাতন ৪৪ টাকার স্থলে ৫০ টাকা, মিনিকেট প্রকার ভেদে ৫২ টাকার স্থলে ৬০ টাকা, মোটা চাল ৩৪ টাকার স্থলে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারের একজন ক্রেতা মিজার খন্দকার বাংলানিউজকে জানালেন, শাক-সবজির দাম অনেক চড়া। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবধরনের সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতিনিয়তই দাম বাড়ছে হু হু করে। যা সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে ক্রেতাদের।

শহরের খুচরা ক্রেতা আজিজুল হক বাংলানিউজকে জানান, ইরি-২৮ চাল কিনেছি ৫০ টাকা দরে। তবে ক্রেতারা নতুন-পুরাতনের চক্করে পড়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে। পেয়াজের দাম হটাত করেই বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।  

শহীদ জিয়া বাজারের কাঁচা সবজির খুচরা বিক্রেতা বাবু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, সবজির দাম পাইকারী বাজারে অনেক বেশি, চাহিদা অনুযায়ী পাওয়াও যাচ্ছে না। তাই বেশি দামে কিনে চড়া দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে খুচরা বাজারে।

কুড়িগ্রাম শহীদ জিয়া বাজারের কাঁচা সবজির পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে জানান, অল্প কিছুদিন আগে বন্যা হয়ে যাওয়ায় মরিচ ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। এখন ৩/৪ দিন ধরে বৃষ্টিতে মরিচ ক্ষেতে পানি জমায় মরিচের সরবরাহ কমে গেছে। জেলার বাইরে থেকেও মরিচ তেমন একটা আসছে না। তাই মরিচের দাম পাইকারি ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম শহীদ জিয়া বাজারের কাঁচা সবজির পাইকারি বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম সুভাষ বাংলানিউজকে জানান, সরবরাহ কম থাকায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন সবজির দাম বেড়ে দিগুণ হয়েছে। তবে পাইকারী বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।

শহীদ জিয়া বাজারে পেয়াজের পাইকারি বিক্রেতা বাদশাহ আলম বলেন, আমরা হিলি থেকে পেঁয়াজ এনে বিক্রি করি। ভারতে পেঁয়াজের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ মূল্যে কিনতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় ঘাটতি পূরণ হচ্ছে না।  

শহীদ জিয়া বাজারের খাদ্য শষ্য ব্যবসায়ী ও কমিশন এজেন্ট মাহফুজার রহমান মুকুল বাংলানিউজকে জানান, বেশকিছুদিন ধরে কুড়িগ্রামে চালের বাজার স্থীতিশীল রয়েছে। খুচরা বাজারে বেশি দরে চাল বিক্রির বিষয়ে আমাদের জানা নেই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।