ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিলেটে ১৫০ কোটি টাকার চামড়া কিনবেন ব্যবসায়ীরা 

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
সিলেটে ১৫০ কোটি টাকার চামড়া কিনবেন ব্যবসায়ীরা  ফাইল ফটো

সিলেট: চামড়া সংগ্রহে এবারও পুরানো শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। ঈদুল আজহায় সিলেট বিভাগে ১৫০ কোটি টাকার পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন তারা। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ টাকায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ গরু, খাসি ও ছাগলের চামড়া কেনা হবে। এর মধ্যে প্রায় চার লাখের বেশি গরু ও আড়াই লাখ খাসি, ছাগল ও ভেড়ার চামড়া কিনেবেন ব্যবসায়ীরা।

 

বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত না হলে এই টার্গেট পূরণ সম্ভব হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, প্রতি বছরই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিনিয়োগ। কেননা ঢাকা ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশন থেকে চাহিদা মতো টাকা আসে না। প্রতি বছর শতকরা ৩০/৩৫ শতাংশ টাকা আসে। অন্তত ৫০ বা ৫৫ শতাংশ টাকা বিনিয়োগ হিসেবে এলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

জানা যায়, এবার গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা, খাসি ২২ টাকা ও ছাগল-ভেড়া ১৫ টাকা ফুট। তবে চামড়া বড় থাকলে দামও ফুটে দু’চার টাকা বেশি থাকে।

সিলেট শাহজালাল (র.)  বহুমুখী চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি শাহীন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, গতবছর পৌনে ২০০ কোটি টাকার চামড়া কেনা হয়েছিল।  

তবে এবার চামড়ার দাম কম হওয়াতে টাকার হিসেবটা কমে আসছে। তাছাড়া সব জায়গার চামড়ার দাম সমান নয়, সিলেটের তুলনায় পার্শ্ববর্তী অন্য জেলা-উপজেলা থেকে আসা চামড়ার বাজার দর দাম তুলনামূলক কম থাকে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, এবার চামড়া পাচারে শঙ্কা না থাকলেও প্রক্রিয়াজাত করা নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা। গত বছর ৭৪ কেজি লবণের বস্তা ছিল ১ হাজার ৪৫০ টাকা। এবার বস্তা ১২০০  টাকা হলেও প্রতি বস্তা ওজনে ৫০/৫৫ কেজি।  তাছাড়া বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ নাই। এ জন্য গতবছরের মতো কেনা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদুল আজহায় সিলেটে চামড়ার মূল তিনটি হাট বসে। সেগুলো হলো-সিলেট ক্বীন ব্রিজের উত্তরপাড় ট্রাফিক পয়েন্ট, নগরীর রেজিস্ট্রি মাঠ অস্থায়ী হাট ও দক্ষিণ সুরমার কদমতলী। সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে জবাই করা পশুর চামড়া এনে এসব হাটে বিক্রি করা হয়।  

সিলেট বিভাগে সমিতির অন্তর্ভুক্ত শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এসব বাজার থেকে চামড়া সংগ্রহ করে। এর বাইরেও কিছু ব্যবসায়ী প্রক্রিয়াজাত চামড়া সরাসরি ঢাকায় পাঠান বলে জানা গেছে।  

এবার শুধু সিলেট জেলাতেই প্রায় ৫৫ কোটি টাকার চামড়া সংগ্রহের টার্গেট রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এই টাকার মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক গরু, ৩৫ হাজার খাসি ও ১৫ হাজার ছাগলের চামড়া কেনা হবে।  

গত বছর সিলেটে প্রায় ৬০ কোটি টাকায় ৮০ হাজার পিস গরুর চামড়া, ৩৫ হাজার পিস খাসি ও অন্তত ২৫ হাজার পিস ছাগলের চামড়া কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

গতবার গরুর চামড়া ৪০, খাসির ২০ এবং ছাগল-ভেড়া ১৫ টাকা ফুট কেনা হয়।  
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, লবণের দাম কমে না এলে চামড়া শিল্পে দুর্দিন নেমে আসবে। উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, লবণের বস্তা ছিল ৬২০ টাকা। গত বছর ছিল ১৪৫০ টাকা। এবার প্রতিবস্তা লবণ ১ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি হলেও বস্তায় পরিমাণ কমেছে।  

শাহীন আহমদ বলেন, গতবছর যে বস্তায় ৭৪ কেজি ছিল, সেখানে এবার হয়েছে ৫৫ কেজি। লবণের দাম বাড়ায় প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে অনেক চামড়া নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
এনইউ/এসএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।