ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ক্রেতাদের নজর কাড়ছে ৫০ মণের মানিক ও বাবু

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২১
ক্রেতাদের নজর কাড়ছে ৫০ মণের মানিক ও বাবু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: এ বছর কোরবানির ঈদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সবার নজর কাড়ছে ৫০ মণ ওজনের মানিক ও বাবু যুগল। প্রতিদিন দীর্ঘদেহী এই দুটি ষাঁড়কে দেখতে উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের মসলন্দপুর গ্রামের অলি মিয়ার খামারে ভিড় করছেন অসংখ্য লোকজন।

কেউ কেউ আবার ষাঁড় দুটির দাম হাঁকাচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রবাস ফেরত অলি মিয়া ও তার স্ত্রী হাবিবা বেগম বাড়ির আঙিনায় একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। যেখানে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। সে সব পশুর মধ্যে রয়েছে মানিক ও বাবু নামে দুটি ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়।

অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ষাঁড় দুটির লালন পালন করছেন তারা। প্রতিদিন তাদের খাবারের তালিকায় রয়েছে খৈল, ভূষি, বন, খড় ও ঘাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার। তাদের পরিচর্যায় একজন লোকও রাখা হয়েছে। কালো দেহী মানিকের ওজন প্রায় ২৫ মণ। আগাগোড়া একেবারে তুলতুলে মাংসল। সাদা রংয়ের বাবুরও ওজন প্রায় ২৫ মণ। দেখতে অনেকটা গোলগাল।  

ক্রেতারা শান্ত প্রকৃতির মানিক ও বাবুর দাম এখন পর্যন্ত হাঁকিয়েছেন প্রায় ১৪ লাখ টাকা। কিন্তু মালিক অলি মিয়া ষাঁড় দুটির বিক্রয় মূল্য নিধারণ করেছেন ২২ লাখ টাকা।

খামার মালিক অলি মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, গত চার বছর ধরে মানিক ও বাবুর লালন পালন করছেন। কোরবানির ঈদে বিক্রি করার লক্ষ্যে তাদের প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। ষাঁড় দুটির খাবারের পেছনে প্রতিদিন এক হাজার টাকা খরচ করছেন। শুধু তাই নয় তাদের খাবারের জন্য বাড়ির পাশে তিন কানি জমিতে ধান চাষ বাদ দিয়ে ঘাসের আবাদ করেছেন। তিনি আরো বলেন, পরিবারের সদস্যের মতই তাদের প্রতিপালন করা হচ্ছে। তবে খামারের পরিধি বাড়ানোর জন্য এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে শত কষ্ট সত্বেও গরু দুটি বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।

তার স্ত্রী হাবিবা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, চার বছর আগে খামারে থাকা একটি গাই গরু থেকে এ দুটি ষাঁড়ের জন্ম। অনেক শখ করে তাদের নাম রাখা হয়েছে মানিক ও বাবু। তারপর থেকেই কোরবানির ঈদে বিক্রি করার লক্ষ্য নিয়ে এ দুটিকে লালন পালন করা হচ্ছে। এবারের ঈদে মানিক ও বাবুকে বিক্রি করে দেওেয়া হবে। মনে শত কষ্ট থাকলেও তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন গ্রামবাসী বাংলানিউজকে বলেন, অলি মিয়া প্রবাস থেকে ফেরার পর অনেকদিন বেকার বসেছিলেন। তারপর ছোট্ট একটি খামার দিয়ে গরু পালন শুরু করেন। প্রথমে তার খামারটি লোকসানে চলছিল। এখন দুটি ষাঁড় বিক্রি করে তিনি লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তার খামারে বৃহৎ আকারের ষাঁড়গুলির মত এলাকায় আর কোথাও আছে বলে মনে হয় না। আমরা আশাকরি এগুলি বিক্রির মাধ্যমে অলি মিয়া আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হবে পাশাপাশি তার খামারটি সমৃদ্ধ হবে।  

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ বি এম সাইফুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকেই প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসছেন। তাদের কাছে যে পুঁজি আছে তা বিনিয়োগের নিরাপদ স্থান হচ্ছে পশু পালন। এতে স্বল্প পুঁজি দিয়ে গ্রামীণ পরিবেশে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ পশুপ্রাণী পালন করে তারা লাভবান হতে পারবেন। তবে যারা এ ধরনের উদ্যোগ নেবেন তারা যেন বিষয়টি আমাদের অবহিত করেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। খামারি অলি মিয়া যে উদ্যোগ নিয়েছেন আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। এবং যেকোনো প্রয়োজনে আমরা তার পাশে থাকব।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।