ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ফেনীতে প্রথমদিনে বিতরণ হয়েছে ৬০ শতাংশ বই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৩
ফেনীতে প্রথমদিনে বিতরণ হয়েছে ৬০ শতাংশ বই

ফেনী: বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই হাতে পেয়েছে ফেনীর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ঝকঝকে নতুন বইয়ের পাতার ঘ্রাণে রীতিমতো বই উৎসবে মতোয়ারা তারা।

তবে এই উৎসবের ভিড়ে অনেকের মুখ মলিন। কারণ, সহপাঠীদের মতো তাদের হাতে পৌঁছায়নি নতুন বই।

এর কারণ হিসেবে জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বলছে,  ছাপায় জটিলতা ও নতুন কারিকুলামের কারণে বছরের প্রথম দিনে চাহিদার ৬০ শতাংশ বই বিতরণ হয়েছে। শিগগিরই বাকি ৪০ শতাংশও পূরণ হয়ে যাবে।  

শহরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায় অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বই এলেও ক্লাস সেভেনের বই এখনও আসেনি।  

শিশু নিকেতন স্কুলে গিয়ে দেখা যায় নতুন বই জোটেনি ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের।  

জেলার সোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের স্কুলের ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং প্রাথমিকের ২য় ও ৩য় শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী নতুন বই পায়নি।  

শোয়েব নামের ফেনী পাইলট হাইস্কুলে শিক্ষার্থী শোয়েব বলেন, নতুন বই পাব বলে এসেছিলাম। অনুষ্ঠান হয়েছে কিন্তু বই পাইনি। স্যাররা বই দেয়নি। না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। শিক্ষকরা বলছেন পরে। কবে দেবে জানি না।  

ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শোয়াইব ইবনে মোস্তফা বলেন, বই নিতে বিদ্যালয়ে আসলেও অনুষ্ঠানে কয়েকজনকে বই দিয়ে আর কাউকে বই দেওয়া হয়নি।  

আব্দুল্লাহ্ আল মাসুদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বছরের প্রথমদিনে বই দেবে বলার পর আমরা বিদ্যালয়ে এসেছি। কিন্তু বই না পেয়েই ফিরে যাচ্ছি।

রেজোয়ান হায়দার নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার সন্তান ৯ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। বিদ্যালয়ে নতুন বইয়ের জন্য আসলেও শিক্ষকরা কাল আসতে বলেছেন। এখন খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে।  

এর কারণ জানাতে শিক্ষা অফিস বলছে, ১ম, ২য়, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামে বই হবে। সেজন্য বই হাতে আসেনি। বছরের প্রথম দিন না পেলেও অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ওইসব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে বই পৌঁছে যাবে। তবে কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকরা বলেন, খুব শিগগিরই বললেও ধারণা করা হচ্ছে বাকি বইগুলো পেতে বছরের মার্চ মাস হয়ে যাবে।  

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফি উল্ল্যাহ বলেন, চলতি বছর জেলায় ২৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫২৭ বইয়ের চাহিদা রয়েছে। বিপরীতে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ২১০ কপি বই এসেছে। যা শতকরা হিসেবে ৬০ শতাংশ। এছাড়া সদর উপজেলা ছাড়া ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির বই এখনও অন্য উপজেলায় পৌঁছেনি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলার ১ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে এবার নতুন বই উঠবে। তম্মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে সব বই এসেছে। ১ম ও ২য় শ্রেণির বই কম পেয়েছি। ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির ৫০ শতাংশ বই পেয়েছি। বাকি বই দুয়েকদিনের মধ্যেই চলে আসবে।

আজ বই উৎসবে ছিলেন ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান। সকাল সাড়ে ৯টায় শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুল আয়োজিত বই উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

ফেনী জেলা প্রশাসক বলেন, যারা পড়াশোনা করে তারাই ভালো থাকে। তারা জীবনকে উপভোগ করতে পারে। বাবা-মা শেষদিন পর্যন্ত সহায় হবে। তারপর সারাজীবন সহায়তা করবে পড়াশোনা। যত বেশি পড়াশোনা করবে, জীবন তত বেশি এগিয়ে যাবে। পড়াশোনা করে দেশের মান রক্ষা করবে।

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুলের সভাপতি মোমেনা আক্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক শফিউল আলম।  এসময় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানা প্রমূখ।

ফেনী পাইলট হাই স্কুল, প্রাইমারি স্কুল, ফেনী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গার্লস ক্যাডেট কলেজসহ জেলার সবকটি স্কুলে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।  


বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৩
এসএইচডি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।