ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবি শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
জাবি শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে ওঠা গুরতর নানা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বর্তমান তদন্ত কমিটির পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।  

সঠিক তদন্ত না হলে সিন্ডিকেট সভার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন ঘেরাও করার  হুমকিও দেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজিত হয়।

অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে অভিযোগ- নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, ওই ছাত্রীর পরীক্ষার পরীক্ষক হওয়া এবং  ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন তিনি।  

এছাড়া প্রভাব খাটিয়ে দায়মুক্তিপত্র লেখানোসহ একাডেমিক অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন।  

এতে বলা হয়, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির কর্মকাণ্ডের তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সেখানে অভিযুক্তের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শিক্ষকদের নামও ছিল। তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগীদের সশরীরে আহ্বান না করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনের বক্তব্য আমলে না নিয়ে, সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অসংখ্য প্রমাণ আমলে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে তদন্ত সম্পন্ন করেছে। তদন্ত চলাকালে অভিযুক্তের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও শিক্ষক লাউঞ্জে আড্ডা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তারা পক্ষপাতদুষ্টতা স্পষ্ট করেছে। এছাড়া গত ২৪ নভেম্বর প্রোক্টর অফিসে একজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি দায়মুক্তিপত্র লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই প্রহসনমূলক তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাই।

 সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন, তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত শিক্ষককে সকল ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং ভূক্তভোগীকে দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে দায়মুক্তিপত্র লেখানোয় প্রোক্টর ও সহকারী প্রোক্টরের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখে প্রমাণিত হলে অব্যাহতি প্রদান করা।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, শিক্ষক জনির কর্মকাণ্ডের প্রভাব ছড়িয়েছে দেশব্যাপী। তার কর্মকাণ্ডের ঘটনা জেনে অনেক অভিভাবক তার সন্তানদের ক্যাম্পাসে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। তার কর্মকাণ্ডের সঠিক বিচার না হলে ক্যাম্পাসে অন্যায় করতে আরও অনেকে সাহস পাবে। আমরা অবিলম্বে তার উপযুক্ত বিচার চাই। নয়তো আমরা আবার বিচারের দাবিতে মাঠে নামতে বাধ্য হব।

 জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, আমরা সবসময় আন্দোলনে নামতে চাই না। কিন্তু কমিটির পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আমাদের নামতে বাধ্য করছে। আমরা চেয়েছিলাম নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচার হোক। যা সকল অন্যায়কারীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। অভিযুক্ত যেই কাজ করেছেন তা কখনই মেনে নেওয়ার নয়। আমাদের দাবি না মানলে আমরা অচিরেই বড় আন্দোলনে নামব।

 আনিছা পারভীন বলেন, আমাদের কাছে থাকা তথ্য প্রমাণাদি তদন্ত কমিটির কাছে সরবরাহ করার জন্য আমরা একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু পক্ষপাতদুষ্ট কমিটি আমাদের সেই আহ্বান সাড়া দেয়নি। তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া দুয়েকটি নিউজ কাটিং দেখে তাকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সঠিক বিচার না হলে আমরা রেজিস্ট্রার ভবন ঘেরাও করব।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মো. সোহেল রানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আবু সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।