ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

 ‘এখন আমরা ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারব’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৩
 ‘এখন আমরা ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারব’

বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় কালের কণ্ঠ’র উদ্যোগে গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের চর চল্লিশসালে শুভসংঘ স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। ছবি  কালের কণ্ঠ
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জয়নাল আবেদীন।

একদিকে বাবার অনটনের সংসার, অন্যদিকে এলাকায় স্কুল না থাকায় সাত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তাকে স্কুলে যেতে হতো। এটা খুব কষ্টের ছিল। এখন বাড়ির পাশে দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার অর্থায়নে কালের কণ্ঠ’র শুভসংঘ স্কুল নির্মাণ করে দিচ্ছে। এ নিয়ে অনেক খুশি জয়নাল। ছোট্ট জয়নাল বলে, ‘আমরা অনেক খুশি। এখন আমরা ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারব। আমাদের কষ্ট দূর হবে। লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই। ’

‘এখন আমরা ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারব’দুর্গম চরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে কালের কণ্ঠ শুভসংঘের সহযোগিতায় রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারি ইউনিয়নের চরচল্লিশ গ্রামে শুভসংঘের স্কুল নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি শুভসংঘের সপ্তম স্কুল। গত সোমবার দুপুরে চরচল্লিশ গ্রামে ৪২ জন শিশু শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলটি যাত্রা শুরু করে। স্কুলটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ও জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন।


এ সময় ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার চরচল্লিশ গ্রামে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে শুভসংঘের স্কুল নির্মাণ করা হচ্ছে। রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত শুভসংঘের সাতটি স্কুল করা হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় শুভসংঘের স্কুলে সব শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের সব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, কিন্তু চরচল্লিশ গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। আমরা চেষ্টা করব দ্রুত এই এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে। ’

দুর্গম চরাঞ্চলে চলাফেরা করার রাস্তা নেই। এর মধ্যেও বসুন্ধরা গ্রুপ শুভসংঘ স্কুল নির্মাণ করে দিলে সন্তানরা পড়ালেখার সুযোগ পাবে বলে খুশি অভিভাবকরা। বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ স্কুল নির্মাণ শুরু করায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তাঁরা।


স্কুলটির শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ভীষণ খুশি জেসমিন বেগম। তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় ভালো স্কুল নেই। আজ যে স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো, এই স্কুলের শিশুদের লেখাপড়া করানোর যে দায়িত্ব পেলাম, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। যত দিন স্কুলঘর নির্মাণ করা শেষ না হচ্ছে তত দিন অন্য একটি ঘরে শিশুদের লেখাপড়া করানো হবে। ’

অন্যদিকে গঙ্গাচড়া মডেল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিথী রানী মহন্তকে প্রতিদিন পুরনো একটি বাইসাইকেল নিয়ে টানাটানি করতে হয়। কারণ সাইকেলটি ব্যবহার করে বিথী রানী ও তার ভাই। বিষয়টি জানতে পেরে কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বিথী রানীকে একটি নতুন বাইসাইকেল উপহার দেন। পাশাপাশি বিথীর লেখাপড়ার জন্য প্রতি মাসে তাকে দুই হাজার টাকা করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বিথী রানী মহন্ত জানান, বাবার অভাবের সংসারে লেখাপড়া করতে অনেক কষ্ট হচ্ছিল। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাকে যে সাইকেল ও টাকা দেওয়া হচ্ছে এ জন্য কৃতজ্ঞতা জানায় সে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন গঙ্গাচড়া উপজেলার এসি ল্যান্ড নয়ন কুমার সাহা, লক্ষীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদি, শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, গঙ্গাচড়া মডেল থানার পুলিশ (তদন্ত) কর্মকর্তা মমতাজুল ইসলাম, সাংবাদিক স্বপন চৌধুরীসহ স্থানীয় অভিভাবকরা।


সাংবাদিকের কলম ও কণ্ঠ কারো সঙ্গে কম্প্রোমাইজ না করার আহ্বান জানিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ও জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেছেন, ‘নূরজাহান লিখতে আমার ১৮ বছর সময় লেগেছে। ’

গত সোমবার সন্ধ্যায় রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব আয়োজিত মিলন সন্ধ্যায় বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ক্লাবের সভাপতি কালের কণ্ঠ’র রংপুর অফিস প্রধান নজরুল ইসলাম রাজুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নানের সঞ্চালনায় মিলন সন্ধ্যায় ক্লাব সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সাহিত্যপ্রেমীরা অংশ নেন।  

সূত্র: কালের কণ্ঠ 

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২৩
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।