ঢাকা: দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখে অষ্টম দিনের মতো ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন মাধ্যমিকের শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গত ৮ দিন ধরে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রেসক্লাবের সামনের দুপাশের সড়ক অবরোধ করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই পথে চলাচলকারী যাত্রীরা।
সেখানে শেখ রফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, আমি যাব মতিঝিল। কিন্তু, এই সড়কে যান না চলাচল করায় হেঁটেই যেতে হচ্ছে।
এদিকে,আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলছেন, প্রথমে কিছুসংখ্যক শিক্ষক এই কর্মসূচি শুরু করলেও আজ থেকে বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা। সামনে আমরণ অনশনের মতো কর্মসূচিও আসতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিপুলসংখ্যক শিক্ষক এ লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। সেখানে কথা হয় আন্দোলনকারী এক শিক্ষকের সঙ্গে। নারায়ণগঞ্জ বন্দর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গত ১১ তারিখ থেকেই আমাদের এ আন্দোলন চলছে। আমরা মূলত মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছি। আমাদের স্কুল থেকে দুজন এসেছি এখানে।
ফরিদপুরের বাইতুল মোকাদ্দেম ইন্সটিটিউটের শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মূলত বৈষম্যের শিকার। এক হাজার টাকা আমরা বাড়িভাড়া পাই, সরকারি শিক্ষকরা পান মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ। আমরা চিকিৎসা ভাতা পাই ৫০০ টাকা, আর সরকারি শিক্ষকরা অনেক বেশি পান। ঈদ বোনাস নিয়েও এই বৈষম্য আছে। এই বৈষম্য দূরীকরণের জন্য জাতীয়করণের দাবিতেই আমরা আজকে এখানে অবস্থান নিয়েছি।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে ১১ জুলাই থেকে এ কর্মসূচি চলছে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওসার আহমেদ বলেন, যত দিন পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা না আসবে, তত দিন পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। হয়তো কর্মসূচিতে ভিন্নতা আসবে।
বর্তমানে সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরের ২০ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬৮৪টি, বাকিগুলো বেসরকারি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যমিকে মোট শিক্ষার্থী ১ কোটি ১ লাখ ৯০ হাজার ২২। মোট শিক্ষক আছেন পৌনে তিন লাখের মতো।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অধিকাংশই এমপিওভুক্ত। এর মানে হলো এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে বেতনের মূল অংশসহ কিছু ভাতা পান। দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৩
এমকে/এসআইএস