ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

গণিত-মানবিকে সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ফল বিপর্যয় 

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
গণিত-মানবিকে সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ফল বিপর্যয়  ছবি: মাহমুদ হোসেন

সিলেট: গণিত ও মানবিকে ডুবলো সিলেট শিক্ষা বোর্ড। ফলাফল বিপর্যয়ের পেছনে এ দুই কারণ তুলে ধরেছেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর অরুণ চন্দ্র পাল।

 

তিনি বলেন, এবার গণিত বিষয়ে সিলেট বোর্ডের প্রশ্নপত্র খুবই কঠিন করা হয়েছে। যেটি পরীক্ষার সময়ও শিক্ষক এবং বোর্ড সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এছাড়া অন্যান্য বিভাগে বিজ্ঞানে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি থাকলেও সিলেট বোর্ডে মানবিক বিভাগে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি থাকে। যে কারণে অকৃতকার্যের হার বেড়ে যায়।

অঙ্কে বেশি ফেল করার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রফেসর অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, আমরা প্রশ্নপত্র লটারির মাধ্যমে পাই। সিলেট বোর্ডের অঙ্কের প্রশ্নটা অনেক কঠিন ছিল। এটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের উপ কমিটিতে তুলে ধরেছি। এ কারণে পাসের হার নেমে গেছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষায় জোর দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তার মতে, স্কুলগুলোতে ক্লাস নাইনে ৫০ ভাগ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান শিক্ষায় পড়াশোনা করা উচিত। বাকি শিক্ষার্থীরা ব্যবসা ও মানবিকে পড়া উচিত। এক্ষেত্রে বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের বোঝা উচিত।   

শুক্রবার সিলেট শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর বোর্ডে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৩২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৮৩ হাজার ৩০৬ জন শিক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৪৫ হাজার ২৮৩ এবং ছাত্রী সংখ্যা ৬৪ হাজার ২৪৯ জন। ছেলে ৩৩ হাজার ৯০৯ জন ও মেয়ে ৪৯ হাজার ৩৯৭ জন পাস করেছে।

এ বছর এসএসসিতে ২৬ হাজার ২২৬ জন পরীক্ষার্থী ফেল করেছে। ছেলেদের মধ্যে ফেল করেছে ১১ হাজার ৩৭৪ জন এবং মেয়ে পরিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তীর্ণ হতে পারেনি ১৪ হাজার ৮৫২ জন।

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের তথ্যমতে, মানবিকে ৭৯ হাজার ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৫৬ হাজার ১৬২ জন কৃতকার্য হয়েছে। এই বিভাগে পাসের হার মাত্র ৭০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অর্থাৎ মানবিকে ফেল করেছে ২৩ হাজার ১৩১ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ১০ হাজার ১৫ জন ছেলে ও ১৩ হাজার ৮৬ জন মেয়ে।

২০২৩ সালে গণিতে পাসের হার ৮৮ দশমিক ৮ শতাংশ। গণিতে ৯৯ হাজার ২০১ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৮৭ হাজার ৩৬৩ জন। কেবল গণিতেই ফেল করেছে ১১ হাজার ৮৩৮ জন। গত বছর গণিতে পাসের হার ছিল ৮৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত বছরের চেয়ে এ বছর অঙ্কে পাসের হার ১ দশমিক ৮১ শতাংশ কমেছে।   

এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলায় ২ হাজার ৭১১ জন, ইংরেজিতে ৮ হাজার ২২ জন, ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে ৩৮৮ জন, ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষায় ১ হাজার ৭১০ জন, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় ৫৩৪ জন, উচ্চতর গণিতে ৩০৫ জন, বিজ্ঞানে ৩ হাজার ৭৪৪ জন, কৃষি শিক্ষায় ২ হাজার ৬৪৯ জন, পদার্থ বিজ্ঞানে ২৬৪ জন, রসায়নে ১ হাজার ৮০ জন, জীব বিজ্ঞানে ২৭৭ জন, পৌরনীতিতে ১ হাজার ৪৬২ জন, অর্থনীতি ১৭৬ জন, ব্যবসায় উদ্যোগ ১০২ জন, হিসাব বিজ্ঞানে ২৭৩ জন, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে ৫০ জন, গার্হস্থ্য বিজ্ঞানে ৫৩৮ জন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিষয়ে ১৫২ জন, বাংলাদেশের ইতিহাস ৩ হাজার ৫৭৪ জন এছাড়া আইসিটিতে ১ হাজার ১১১ জন ফেল করেছে।   

শুক্রবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল সংবাদ সম্মেলন করে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন।

ঘোষিত ফলাফলে এবার বোর্ডের পাসের হার ৭৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। গত বছরের চেয়ে ফলাফল ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে। গত বছর এসএসসিতে পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।

এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৪৫২ জন। এরমধ্যে ছেলে ২ হাজার ৪৭০ ও মেয়ে ২ হাজার ৯৮২ জন। গত বছরের চেয়ে এবার ২ হাজার ১১৩ টি জিপিএ-৫ কমেছে। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭ হাজর ৫৬৫ শিক্ষার্থী।

প্রাপ্ত ফলাফল পর্যবেক্ষণে দেখা যায় এ বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির উভয় সূচকে পিছিয়ে গেল সিলেট শিক্ষাবোর্ড।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
এনইউ/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।