পাথরঘাটা (বরগুনা): চিঠি বিতরণ করা সেই মানবিক মানুষ সফিউদ্দিন মাস্টার ইন্তেকাল করেছেন।
সোমবার (২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাথরঘাটা কলেজে ঈদ এ মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ঢলে পড়েন তিনি।
তাৎক্ষণিক পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সোমবার আছর নামাজ শেষে পাথরঘাটা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় গোরস্থানে এ শিক্ষকের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
পাথরঘাটা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মহাসিন কবির বলেন, কলেজে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। বক্তব্যের এক পর্যায়ে মহানবী বলার সঙ্গে সঙ্গে আবেগি হয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় দাঁড়ানো অবস্থায় ঢলে পরে যাচ্ছিলেন। কলেজের শিক্ষক জাকির হোসেন জড়িয়ে ধরেন তাকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমি এমন মৃত্যু কখনও দেখিনি।
প্রবীণ সাংবাদিক মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ বলেন, সফিউদ্দিন মাস্টার একজন মানবিক এবং গুণী মানুষ ছিলেন। তিনি শিক্ষকতা পেশায় যেমন আলো ছড়িয়েছেন তেমনি অবসরে গিয়েও দেখা আলো ছড়িয়েছেন। এমন মানুষের দেখা মেলে না।
শিক্ষক সফিউদ্দিনের বাড়ি পাথরঘাটা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি ৫ ছেলে ও ৫ মেয়ে রেখে গেছেন। তার আদি বাড়ি বরগুনার নলটোনা ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া গ্রামে।
১৯৯৪ সালে বরগুনার নিশানবাড়িয়া একটি বিদ্যালয় শিক্ষকতা থেকে অবসরে যান সফিউদ্দিন। পাথরঘাটাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শিক্ষকতা করেছেন তিনি। অবসরে গিয়েও বসে ছিলেন না।
লেখালেখি আর মানবসেবা, গ্রামের সাধারণ মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসাসেবা এবং ডাক বিভাগ থেকে প্রাপকের কাছে চিঠি দিয়ে আসতেন। এমন সেবা দিয়ে গেছেন মৃত্যুর ঠিক আগ পর্যন্ত। যে কারণে জেলায় মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই শিক্ষক।
শিক্ষকতা থেকে অবসরে এসে তিনি বরগুনা, নিশানবাড়িয়াসহ আশপাশের গ্রামগঞ্জে ও পাথরঘাটার বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে নিভৃতে আলো ছড়ানোর কাজ করে গেছেন।
জীবদ্দশায় একাধিক বই লিখেছেন এই শিক্ষক। পাথরঘাটা লেখক পরিষদের একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২৩
এসএএইচ