ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগ কীভাবে, পরিপত্র জারি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগ কীভাবে, পরিপত্র জারি প্রতীকী ছবি

ঢাকা: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম প্রবেশ পর্যায়ে (এন্ট্রি লেভেল) শিক্ষক নিয়োগে অনুসরণীয় পদ্ধতি কী হবে তা জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

গত ২৫ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান স্বাক্ষরিত পরিপত্র প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১ নং আইন)-এর ধারা ৮ (ট) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার উক্ত আইনের ধারা ২ (ঝ)-তে বর্ণিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রথম প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ প্রদানের দায়িত্ব বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) উপর অর্পণ করে এ বিষয়ে উল্লিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

প্রযোজ্যতা:

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে অনুসরণীয় এ পদ্ধতি কেবল প্রথম প্রবেশ পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান বা সহকারী প্রধানসহ যেসব শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে সেসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে না।

নিবন্ধন পরীক্ষার জন্য চাহিদা পত্র প্রেরণ:

প্রত্যেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটি অথবা গভর্নিং বডির অনুমোদনক্রমে পরবর্তী পঞ্জিকা বছরে তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়োগযোগ্য পদের একটি চাহিদাপত্র উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠাবেন।

উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তার উপজেলা/থানার প্রাপ্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা একীভূত করে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে একটি সংকলিত/সমন্বিত চাহিদাপত্র জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠাবেন।

জেলা শিক্ষা অফিসার উক্ত চাহিদাসমূহ একীভূত করে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জেলার একটি সংকলিত /সমন্বিত চাহিদাপত্র এনটিআরসিএতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও মেধা তালিকা প্রণয়ন:

এনটিআরসিএ দেশের সকল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রবেশ পর্যায়ের শিক্ষকদের নিয়োগযোগ্য পদের সমন্বিত চাহিদার আলোকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০০৬ অনুসারে নিবন্ধন পরীক্ষা (প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক) গ্রহণ করবে এবং পদভিত্তিক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মেধার ভিত্তিতে ফলাফল প্রণয়নপূর্বক ঘোষণা করবে। একই সঙ্গে পূর্ববর্তী নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও সর্বশেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অন্তর্ভুক্ত করে এবং ইতোপূর্বে নিবন্ধিত মেধা তালিকা বর্হিভূত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ঐচ্ছিক বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সম্মিলিত জাতীয় মেধা তালিকা হালনাগাদ করবে।


নিয়োগ সুপারিশের জন্য চাহিদা গ্রহণ, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও বাছাই/নির্বাচন:

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির অনুমোদনক্রমে প্রথম প্রবেশ পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে পদ শূন্য হওয়ার সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোতে সরকার নির্ধারিত কোটার প্রাপ্যতা উল্লেখপূর্বক উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে এনটিআরসিএতে অনলাইনে চাহিদা পাঠাবেন। অনলাইনে চাহিদা প্রেরণের জন্য এনটিআরসিএ এর সংশ্লিষ্ট ওয়েবলিংক খোলা থাকবে। শূন্যপদের সঠিকতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে এনটিআরসিএ প্রয়োজনে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান বুরো (ব্যানবেইস) অথবা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহায়তা গ্রহণ করবে।

শূন্যপদের চাহিদা প্রাপ্তি সাপেক্ষে এনটিআরসিএ প্রয়োজনে তিন মাস অন্তর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে পারবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে প্রাপ্ত শূন্যপদের ভিত্তিতে ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করবে এবং নিবন্ধিত প্রার্থীগণ বিজ্ঞপ্তি প্রচারের ১৫ দিন অথবা এনটিআরসিএ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করবেন।

অনলাইনে আবেদন গ্রহণের সময় শেষ হওয়ার পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে শূন্যপদের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটি পদের বিপরীতে প্রার্থীদের পছন্দ ও মেধার ভিত্তিতে একজন করে প্রার্থী নির্বাচন করবে এবং তা প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবে। এনটিআরসিএ প্রয়োজনে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য তথ্যাদির সঠিকতা যাচাইয়ের জন্যে তথ্য/সার্টিফিকেট/ সনদ নির্বাচিত প্রার্থীকে দাখিল করতে বলতে পারবে। কেউ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ বা চাহিত তথ্য না দিলে তাকে সুপারিশের জন্য বিবেচনা করা হবে না।

প্রাথমিক নির্বাচনের ফলাফলের পর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্যপদে প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় অনলাইনে শূন্যপদের চাহিদা পাঠাবে।

নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন (ভি-আর) ফরম দাখিল:

এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রার্থী নির্বাচনের পর নির্বাচিত প্রার্থীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশনের লক্ষ্যে ভি-আর ফরম দাখিলের অনুরোধ জানানো হবে।

এনটিআরসিএ প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিকট থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ডি-আর ফরম প্রাপ্তির পর তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠাবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ভি-আর ফরম দাখিল না করলে তাকে নিয়োগ সুপারিশের জন্য বিবেচনা করা হবে না।

নিয়োগ সুপারিশপত্র ও নিয়োগপত্র প্রদান:

নির্বাচিত প্রার্থী চাকুরির জন্য উপযুক্ত মর্মে পুলিশ প্রতিবেদন প্রাপ্তির ভিত্তিতে অথবা ক্ষেত্র বিশেষে পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান অবস্থায় শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগ সুপারিশ প্রদানের বিষয়ে সরকারের পূর্বানুমোদনের ভিত্তিতে এনটিআরসিএ নিয়োগ সুপারিশ প্রদানপূর্বক প্রার্থী এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবে। সে অনুসারে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে ক্ষেত্রমত ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীকে এক মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র দেবে।

কর্মরত শিক্ষকদের আবেদনে প্রতিবন্ধকতা: 

কর্মরত শিক্ষকগণের (ইনডেক্সধারী) ক্ষেত্রে সমপদে নিয়োগ সুপারিশের পুনঃআবেদন বিবেচনা করা হবে না। তবে, কর্মরত পদ ব্যতীত অন্য কোনো উচ্চতর বা নিম্নতর পদের জন্য এন.টি.আর.সি.এ.-এর প্রত্যয়নপত্র থাকলে ইনডেক্সধারী শিক্ষকগণ উক্ত অন্য পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

পরিপত্রের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বিধি-বিধান প্রণয়ন:

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ডসমূহসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান বিধি-বিধান ইত্যাদি-তে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে পরীক্ষা গ্রহণ, প্রার্থী বাছাই ও নিয়োগের বিষয়ে বর্ণিত কোনো বিধি-বিধান যদি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০০৬ ও বর্তমান পরিপত্রের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে উক্ত বিধি-বিধান সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ পরিপত্র জারির তিন মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।

অযোগ্যতা:

কোনো প্রার্থীর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসারে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলে অথবা সংশ্লিষ্ট বিষয় ও পদের জন্য এনটিআরসিএ প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র না থাকলে অথবা এনটিআরসিএ প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্রের মেয়াদ (উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ/আদালত কর্তৃক নির্ধারিত) উত্তীর্ণ হলে অথবা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরিতে প্রবেশের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বয়সসীমা উত্তীর্ণ হলে তিনি নিয়োগ সুপারিশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

পূর্ববর্তী পরিপত্র বাতিল ও চলমান কার্যক্রম হেফাজত:

২০১৫ সালের গত ১১ নভেম্বর জারিকৃত ৩৭,০০,০০০০.০৭১.০৮.০০৮.০৫. (অংশ)-৯৪২ নং পরিপত্র এবং ৩০ ডিসেম্বর জারিকৃত ৩৭,০০,০০০০,০৭১,০৮,০০৮.০৫. (অংশ)-১০৮১ নং পরিপত্র বাতিল করা হলো। তবে, উক্ত পরিপত্র/বিজ্ঞপ্তি/নীতিমালা/নির্দেশিকা/স্মারক-এর আলোকে কোনো কাজ চলমান থাকলে তা ওই পরিপত্রের আওতায় নিষ্পত্তি করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
এমআইএইচ/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।