ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

আন্তর্জাতিক নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য অন্য ভাষা চর্চা করা প্রয়োজন: উপদেষ্টা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
আন্তর্জাতিক নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য অন্য ভাষা চর্চা করা প্রয়োজন: উপদেষ্টা

ঢাকা: আন্তর্জাতিক নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য আমাদের অন্য ভাষা চর্চা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো মিলনায়তনে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।

'বহু ভাষায় শিক্ষার প্রসার: পারস্পরিক সমঝোতা ও শান্তির জন্য সাক্ষরতা' এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা মানুষের অধিকার। ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭নং অনুচ্ছেদে নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সাক্ষরতা বিস্তারে এ সাফল্যের জন্য আমরা ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পেয়েছি। সাক্ষরতার ক্ষেত্রে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। আমরা অবৈতনিক শিক্ষা ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করেছি। শুধু অবৈতনিক শিক্ষা নয়; আমরা উপবৃত্তি দিচ্ছি, বইপত্র দিচ্ছি, স্কুলে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা কোন কোন স্কুলে হচ্ছে; সেটিকে আরো বিস্তৃত করার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, ভাষা ছাড়া অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, শিশুরা মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারলে তাদের ডেভেলপ হতে সমস্যা হয়। আমরা শুধু দেশের নাগরিক না, আমরা এখন আন্তর্জাতিক নাগরিক। যোগাযোগ, যাতায়াত, অর্থনীতি, সবদিক দিয়ে বিশ^টাই একটি একীভূত বিষয় হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য আমাদের অন্য ভাষা চর্চা করা প্রয়োজন। আমাদের বাচ্চাদেরকে যদি বহু ভাষাভাষী করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে তারা দেশের জন্য সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে। যদি নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি তাহলে দেশ ঠিক হয়ে যাবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, দক্ষতাভিত্তিক সাক্ষরতা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি একটি ভালো প্রকল্প। এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। যদি এতে আশানুরুপ ফলাফল হয়, তবে চেষ্টা থাকবে সেটিকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা শুধু মানুষকে স্বাক্ষর করে তুলতে চাই না, তাদেরকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই; যেন সে কর্মজীবনে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। সাক্ষরতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাক্ষরতার মাধ্যমে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব চেঞ্জ হয়ে যায়। একজনকে সক্ষম করে তোলা মানে তার জ্ঞানের মাত্রাটা অবারিত হয়, অভিজ্ঞতাটা অবারিত হয়, প্রকাশটা অবারিত হয়। স্বাক্ষর মানুষ একটি জাতির জন্য সম্পদ। বিপুল জনসংখ্যার বাংলাদেশের জনসংখ্যা সম্পদ হতে পারে যদি তাদেরকে স্বাক্ষর করে তুলতে পারি, দক্ষ করে তুলতে পারি। মানুষ মানুষ হয়ে ওঠে তার ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে। সভ্যতার অন্যতম আবিষ্কার ‘লিপি’ আবিষ্কার। ‘লিপি’ আবিষ্কার সভ্যতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং এ বিষয়টি মানুষকে আরেকটি স্তরে নিয়ে গেছে।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক নুরজাহান খাতুন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ, বাংলাদেশস্থ ইউনেস্কোর প্রতিনিধি সুসান ভাইজ ।

উপদেষ্টা বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২৪’ এর উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
এমআইএইচ/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।