ঢাকা: অনলাইনে দেওয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে সোমবার রিট আবেদনটি দায়ের করেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত জনৈক তোফায়েল ইসলামসহ তিনজন।
আদালত একইসঙ্গে অনলাইনে দেওয়া বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও অ্যাডভোকেট আমিমুল এহসান জুবায়ের।
হাইকোর্ট সূত্র জানায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে একটি সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৮ আগস্ট দেওয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদনপত্র জমা দানের শেষ সময় ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। ডাক মারফত ছাড়াও সরাসরি আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। ওই বিজ্ঞপ্তির অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট অপর এক আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। পরে অবশ্য সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের উক্ত আদেশটি স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ।
প্রসঙ্গত, গত ১২ আগস্ট দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৯ ক্যাটাগরির ৭৫টি পদে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়।
১৪ আগস্ট আদালত একইসঙ্গে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও রেজিস্ট্রারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আমিনুল ইহসান জুবায়ের। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর।
হাইকোর্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হাইকোর্টের এক রায়ে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৩ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ২০০৪ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে।
২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের দেওয়া আদেশে বলা হয়, এই মামলায় পক্ষভুক্ত চাকরি হারানো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে সেখানে আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে নিয়োগে তাদের বয়সসীমাও শিথিলযোগ্য।
আইনজীবী আমিনুল ইহসান জুবায়ের সাংবাদিকদের জানান, রায়ে হাইকোর্ট উক্ত সময়ে নিয়োগ পাওয়া সবাইকে চাকরিচ্যুত করতে বলেছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করে নাই। সুতরাং আদালতের দেওয়া রায়ের প্রথম অংশে চাকরিচ্যুত করার আদেশ থাকলেও তা বাস্তবায়ন না করে পরবর্তী আদেশ বাস্তবায়ন হতে পারে না।
আদালতে রিটটি দায়ের করেন, ওই রায়ে চাকরি হারানো ছয় কর্মকর্তা কর্মচারী মো. মশিউর রহমান, সেলিম উল হক, মো. গিয়াস উদ্দিন, মো. বরি আমিন, মো. শাহ আলম এবং মো. মঈন উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১২
এমইএস/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর