ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না রেল: তিতুমীর ঐক্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না রেল: তিতুমীর ঐক্য

ঢাকা: সড়ক ও রেলপথ অবরোধের সময় মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ ও যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনাটিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে মনে করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটির দায় রেল কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না বলেও দাবি তাদের।

যদিও ঘটনাটি নিয়ে তারা দুঃখ প্রকাশও করেছেন।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) তিতুমীর ঐক্যের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

এতে বলা জয়, ১৮ নভেম্বর তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিন দফা দাবিতে পূর্ব ঘোষিত বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী চলাকালে রেলপথও এর আওতায় ছিল। বিষয়টি গত ১৪ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন ও প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রশাসন ও গোয়েন্দা বিভাগকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছিল। রেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি আগেই বলা হয়েছিল।

রেল গেটে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ার আগে সেখানকার দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, বলা হয়েছিল বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই পথে কোনো রেল চলবে না। উপকূল এক্সপ্রেস যখন আসছিল তখন ৪-৫ কিলোমিটার দূর থেকে লাল কাপড় দেখিয়ে সংকেত দেওয়া হয় ট্রেনটিকে থামানোর জন্য। কিন্তু ট্রেন চালক সেটি না করে গতি বাড়িয়ে দেন। এই সময় রেল লাইনে অন্তত তিন হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উপকূল এক্সপ্রেসের এমন খামখেয়ালি আচরণের কারণে অন্তত ১২ শিক্ষার্থী আহত হন। ফলে তারা কয়েকটি নুড়ি-পাথর ট্রেন লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন। যে কারণে ট্রেনের ভেতর থাকা শিশুসহ কয়েকজন আহত হন। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত অপ্রীতিকর ঘটনা রেল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত ও ওই সময় ট্রেন চলাচল করার অনুমতির কারণে হয়েছে। যে কারণে এ দায় রেল কর্তৃপক্ষ কোনো কারণে এড়িয়ে যেতে পারে না। সোমবার ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে ‘কলেজ ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা কলেজ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অবস্থান করছেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে ক্যাম্পাসের বাইরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের রাস্তার উল্টোদিকে একটি জলকামানও দেখা গেছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি; অতিরিক্ত দায়িত্ব-ক্রাইম) এ এফ এম তারিক হোসেন খান বলেন, আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। আমরা চাচ্ছি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই থাকুক। কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিপত্তি যেন না ঘটে।

এর আগে সোমবার দুই দফায় সড়ক অবরোধ করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। সকালে প্রথম দফায় মহাখালী এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি ট্রেন অবরোধ উপেক্ষা করে চলে গেলে তারা সেটিতে পাথর নিক্ষেপ করেন। এতে শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহত হন এবং ট্রেনের কয়েকটি জানালা ভেঙে যায়। এরপর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তারা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখেন। এ সময় সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

পরে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা আলোচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে গেলে বিকেল ৪টার সময় তারা অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের আলোচনায় সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ না করায় ফের আড়াই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তারা সড়ক অবরোধ করেন। তবে এবার সরকারি তিতুমীর কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ তুলে নেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।