সিলেট: হাজার ছাত্রের স্মৃতি আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের প্রতীকই নয়, এই ছাত্রাবাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধসহ উপমহাদেশের শত বছরের ঐতিহ্য। দুষ্কৃতিকারীরা পুড়িয়ে দিয়েছিলো ছাত্রাবাসটি।
দীর্ঘ আন্দোলনের পর সিলেটবাসীর দাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ছাত্রাবাসটি পুরাতন আদলে পুনর্নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে।
বুধবার এই নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দু’জনই ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র।
গত ৮ জুলাই ছাত্রলীগ-শিবির রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জের ধরে পুড়ানো হয় এই ছাত্রাবাস। তদন্তে ‘বহিরাগত ছাত্রলীগকে’ দায়ী করা হয়। শুরু থেকেই শিক্ষার্থী ও সচেতন সিলেটবাসী পুরাতন আদলে ছাত্রাবাস পুনর্নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
ছাত্রাবাসটি ঠিক আগের মতো নির্মাণ করতে এতে ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া ছাত্রাবাসের ৩টি ব্লকের ৮৪ টি কক্ষ নির্মাণ করা হবে। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ বাকি ৩টি ব্লকের ছাত্রাবাসের দরজা-জানালাসহ অন্যান্য সংস্কার কাজ করা হবে। এছাড়াও ছাত্রাবাসের ৬টি ব্লকের তত্ত্বাবধায়ক শিক্ষককের আবাসিক বাসভবনেরও সংস্কার কাজ করা হবে। তবে এতে পুরাতন কাঠামো ও শৈলীর একবিন্দুও পরিবর্তন করা হবেনা। অবিকল আগের চেহারায় ফিরিয়ে দিতে সময় লাগবে প্রায় ৬ মাস। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে আগামী বছরের (২০১৩) জুন মাসে।
মঙ্গলবার রাতে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
রাতে সিলেট তালতলাস্থ শিক্ষাভবনে আলাপকালে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল্লাহিল আজাদ ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. হানজালা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী জুন মাসের মধ্যে ছাত্রাবাস পুনর্নির্মাণ প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রণালয় ৫ কোটি টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন করেছেন।
তিনি জানান, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে খুব শিগগিরই এর কাজ শুরু হবে। আগের মতই ব্যবহার করা হবে কাঠ। নতুন নির্মাণ কাজে পুড়ে যাওয়া কোনো জিনিসপত্র ব্যবহার করা হবে না। আগে যে রকম কাঠ নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছিলো। ঠিক সেইরকম কাঠ ব্যবহার করবেন তারা।
এ ব্যাপারে রাতে সিলেট সার্কিট হাউসে অবস্থানরত শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ জানান, ‘‘ছাত্রাবাস নির্মাণের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করা হবে। ছাত্রাবাস নির্মাণের সময় তৎকালীন আসামের সবচেয়ে দামী কাঠ ব্যবহার করা হয়েছিলো, বর্তমানে সেই কাঠ না থাকলেও সর্বোচ্চ মানের কাঠ ব্যবহার করা হবে। ’’
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১২
সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর,নিউজরুম এডিটর eic@banglanews24.com