চট্টগ্রাম: ২০১২ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় (পিএসসি) চট্টগ্রাম জেলায় পাশের হারের পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে।
এ বছর জেলার ২০ টি থানার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ১১ হাজার ৫০৬ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে, যা গতবার ছিল ৫ হাজার ৭৫৮।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘এ বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা সন্তোষজনক সাফল্য দেখিয়েছে। এটা তাদের পরিশ্রমের প্রাপ্তি। ’
জেলার ২০ থানার মধ্যে জিপিএ`র দিক দিয়ে মফস্বলের স্কুল থেকে নগরীর বিদ্যালয়গুলো এগিয়ে আছে।
এর মধ্যে কোতোয়ালী থানার বিভিন্ন স্কুল থেকে ৬ হাজার ২৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ১৫০ জন। গত বছর ছিল ১ হাজার ১৮৯। পাশের হার ৯৮ দশমিক ৬৪।
নগরীর চান্দগাঁও থানায় ৫ হাজার ৮৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৫ হাজার ৮৩৪। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০৫। গতবার ছিল ২৭৫। পাশের হার ৯৯ দশমিক ২২।
বন্দর থানার বিভিন্ন স্কুলে ৫ হাজার ৮৭০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ হাজার ৭৯৩ পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮শ’ ৮০ জন। যা গত বছর ৩`শ৩৩-এ ছিল। পাশের হার ৯৮ দশমিক ৬৯।
পাঁচলাইশে ৭ হাজার ৯৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৬ হাজার ১৫৯ জন। ১ হাজার ১০৪ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে পাশের হার ৯৫ দশমিক ৮১। গত এ থানায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬০৬।
৪ হাজার ৭৩০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাহাড়তলীর বিভিন্ন স্কুলে পাশ করেছে ৪ হাজার ৬৫১ জন। পাশের হার ৯৮ দশমিক ৩৩। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৮৫ শিক্ষার্থী। যা গতবার ছিল ১৬৬।
নগরীর ডবলমুরিং থানায় ৭ হাজার ৫৭৪ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৭ হাজার ১৮৯ পরীক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৪৮৩ জন। আগেরবার ছিল ৬৬৭ জন। পাশের হার ৯৪ দশমিক ৮৫।
এছাড়াও চট্টগ্রামের ১৪ টি উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে পাশের দিক দিয়ে এগিয়ে আছে সীতাকুন্ড। এ থানায় পাশের হার ৯৮ দশমিক ৭৪।
এবার পাশের হার ৯৬ দশমিক ৪৬ যা গত বছর ছিল ৯২ দশমিক ৩১।
সেরা বিদ্যালয় নির্ণয় করা হয়নি:
অন্যান্য বছর সেরা বিদ্যালয়গুলোর তালিকা করা হলেও এ বছর কোন তালিকা করেনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। থানা ওয়ারি বিভিন্ন স্কুলের ফলাফল নির্ণয় করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা এ বিষয়ে বলেন, ‘কোমলমতি শিশুদের মনে প্রভাব ফেলতে পারে এজন্য সেভাবে কোন স্কুলের তালিকা করা হয়নি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘শিশুদের প্রতিটি বিদ্যালয়ই সেরা। তারা জীবনের প্রথম পরীায় সাফল্য লাভ করেছে এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।
বিদ্যালয়ের এমন তালিকা করা হলে নগরী ও গ্রামের স্কুলগুলোর মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি হবে। যা তাদের মানসিক প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
এদিকে ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মফস্বলের স্কুলগুলো থেকে নগরীর বিভিন্ন বিদ্যালয় এগিয়ে রয়েছে।
চলতি বছরের ২১ থেকে ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮০৮ জন মেয়ে এবং ৫ লাখ ৮ হাজার ২৫২ জন ছেলে।
পাশের হার বেড়েছে ইবতেদায়ীতে:
এছাড়া ইবতেদিয়া শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এ বছর চট্টগ্রাম জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমলেও পাশের হার বেড়েছে ১২ শতাংশেরও বেশি । এ পরীক্ষায় এবছর পাশের হার ৮৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ যা গত বছর ছিল ৭৫ দশমিক ৬২ শতাংশ।
এবছর মোট ২১ হাজার ৬১২ জন শিক্ষার্থী ইবতেদায়ী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ১০ হাজার ৯৭৮ জন ছাত্র ও ১০ হাজার ৬৩৪ জন ছাত্রী। গত বছর এ সংখ্যা ছিল মোট ২৩ হাজার ৫৯১ জন।
এ পরীক্ষায় এবছর পাশের হার ৮৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ যা গত বছর ছিল ৭৫ দশমিক ৬২ শতাংশ।
চট্টগ্রাম জেলায় মোট ২১ হাজার ৬১২ জন শিক্ষার্থী ইবতেদায়ী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ১০ হাজার ৯৭৮ জন ছাত্র ও ১০ হাজার ৬৩৪ জন ছাত্রী।
গত বছর মোট ২৩ হাজার ৫৯১ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২ ৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১২
এমবিএম/আরডিজি