ঢাকা: ঢাকার নবাবগঞ্জের জালালপুর উদয়ন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোনো শেণিকক্ষ নেই। বাইরে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া হয় তাদের।
বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা গেছে, বসন্ত কালের প্রখর রোদ ও প্রচণ্ড গরমে অভিভাবকদের বসার জন্য নির্ধারিত জায়গায় প্রাক প্রাথমিক (শিশু) শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস চলছে। প্রধান শিক্ষক আবু মোস্তাক আহমেদ চারপাশ ঘুরে ঘুরে শিশুদের পড়ালেখা শেখাচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বলছেন, রোদে যাদের খারাপ লাগবে আমাকে বলবে। কিছুক্ষণ স্কুলের বারান্দা গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে আবার এসে ক্লাস করবে কেমন? মুহুর্তেই শিশুরা উত্তর দিলো, জি স্যার।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়টি ভালো জেনে বাচ্চাদের ভর্তি করেছেন। কিন্তু শিশু শ্রেণির জন্য কোন ক্লাসরুম নেই। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে বসিয়ে ক্লাস নেন। প্রচণ্ড গরমে বাচ্চাদের বারবার পানি খাওয়াতে হয়। এখন ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম। যেকোন সময় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। আমাদেরকে শিশুদের পাশে বসে থাকতে হয়।
বাহিরে ক্লাস করতে হয় বলে শিশুরা স্কুলে আসতে চায়না । তাই আগামী বছরে আর এখানে রাখা যাবে না । অন্য স্কুলে নিয়ে ভর্তি করতে হবে। একাধিকবার শিক্ষকদের জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এছাড়া বিদ্যালয়ের আঙিনায় রিসোর্স সেন্টার নামে একটি ভবন রয়েছে। যখন শিক্ষকদের ট্রেনিং হয় তখন খোলা থাকে আর বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে । আপাদত সেখানে ক্লাস নিতে পারে কিন্তু শিক্ষকরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।
প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ শিশুদের মাঠে ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে জানান, শ্রেণিকক্ষের জন্য আবেদন করা হয়েছে। যে পর্যন্ত নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ না হবে, এভাবেই চালাতে হবে।
তিনি আরো জানান, আমরা শ্রেণিকক্ষের জন্য চেষ্টা-তদবির করছি কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। বিদ্যালয়ের আঙিনার ভিতর রিসোর্স সেন্টারের ভবনটি আপাদত ব্যবহারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। এছাড়া আমাদের অন্যান্য শ্রেণিকক্ষেও ছাত্র-ছাত্রীর সংখা বেড়েছে। আরো ২/৩টি কক্ষের প্রয়োজন। বসার জন্য বেঞ্চও লাগবে। সরকার আরেকটি ভবন তৈরি করে দিলে সমস্যার সমাধান হবে।
বিদ্যালয়টিতে মোট শ্রেণিকক্ষ রয়েছে নয়টি। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতি শ্রেণিতে রয়েছে দুটি করে গ্রুপ। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক আছেন নয় জন। প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির জন্য শিক্ষক নিয়োগের কথা থাকলেও বিদ্যালয়টিতে এখনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে আশপাশের অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষক রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ জাহিদুল বাংলানিউজকে জানান, বিদ্যালয়টির ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। যে কোন সময় টেন্ডার হতে পারে। প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্যও অডিট চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৪