ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগ পাচ্ছেন পুল শিক্ষকরা

ইসমাইল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৪
শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগ পাচ্ছেন পুল শিক্ষকরা

ঢাকা: সুরাহা হতে যাচ্ছে ‘পুল’ শিক্ষকদের নিয়োগ জটিলতার। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত শিক্ষকদের ছুটিজনিত কারণে শূন্য পদ পূরণে কিছু শর্ত সাপেক্ষে মাসিক ছয় হাজার টাকা সম্মানী ভাতায় এসব শিক্ষক নিয়োগ পাবেন।

 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আপাতত ছয় মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। এজন্য নীতিমালা করা হয়েছে।

এতে দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, শিগগিরই এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ২০১২ সালের আগস্টে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশের পর উত্তীর্ণ ১২ হাজার ৭০১ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। অবশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্য থেকে ১৫ হাজার ১৯ জনকে উপজেলা বা থানাভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষক পুল (চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কাঠামো) গঠনের জন্য নিয়োগের সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ছুটি, সরকারি কাজে অন্যত্র গমন এবং ৭০ ভাগ নারী শিক্ষকের মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ নানা কারণে শিক্ষক সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত হওয়া থেকে মুক্তির জন্য ‘শিক্ষক পুল’ গঠন করা হয়েছিল।

কিন্তু নীতিমালা প্রণয়ন নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় নিয়োগের এক বছরেরও বেশি সময়ে তারা কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি।

পরীক্ষা দিয়েও নিয়োগ না পাওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন পুলভুক্ত শিক্ষকরা। ইতিমধ্যে তাঁদের অনেকেরই চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে।

অবশেষে ‘প্রাথমিক শিক্ষক পুল নীতিমালা-২০১৪’ প্রণীত হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়, এসব শিক্ষকের নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতি উপজেলা বা থানায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি থাকবে। তবে সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি হবে। এসব কমিটি পুলের শিক্ষকদের সাময়িক শূন্যপদে নিয়োগ সুপারিশ করলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাময়িক শূন্যপদের বিপরীতে নিযুক্ত করবেন।

নীতিমালা অনুযায়ী পাঁচ শর্তে শিক্ষকরা নিযুক্ত হবেন জানিয়ে বলা হয়, পুলের শিক্ষকদের নিযুক্তির সময় দেড়শ’ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি চুক্তিতে সই করতে হবে।

শর্তগুলো হলো, সম্মানী ভাতা হবে মাসে ছয় হাজার টাকা, নিয়োগের মেয়াদ হবে ছয় মাস, তবে প্রয়োজনে মেয়াদ নবায়ন করা যাবে। এই নিয়োগ নিয়মিত হবে না এবং এটি স্থায়ী হওয়ার নিশ্চয়তা দেবে না।

তাঁরা সরকারি ছুটি ছাড়া অন্য কোনো প্রকার ছুটি দাবি করতে পারবেন না। তবে অসুস্থতা বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে সাত দিন ছুটি নিতে পারবেন। আর কোনো শিক্ষক কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সম্মানী ভাতা থেকে টাকা কাটা হবে। এছাড়া কেউ অনুমতি না নিয়ে টানা সাত দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর নিয়োগ বাতিল হবে বলে শর্তে উল্লেখ করা হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১১ সালে নেওয়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু নিয়োগ পাননি, শিক্ষক পুলের জন্য নির্বাচিত এমন প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধাক্রম অনুযায়ী উপজেলা-থানা পর্যায়ে পুল গঠন করা হবে। পরবর্তী সময়ে অনুষ্ঠেয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিত প্রার্থীদেরও পুলভুক্ত করা যাবে।

নিয়োগবিধিতে নির্ধারিত যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ন্যাশনাল সার্ভিসের সদস্যদেরও এই পুলে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। তবে পুলে অন্তর্ভুক্ত শিক্ষকের সংখ্যা সারা দেশে সর্বোচ্চ ২০ হাজারের বেশি হওয়া যাবে না।

নীতিমালা অনুযায়ী দেশের প্রতিটি উপজেলা বা থানার জন্য রাজস্ব খাতে সৃষ্ট সহকারী শিক্ষকদের মোট পদের অনধিক ১০ শতাংশ পদের সমন্বয়ে ‘উপজেলা/থানা প্রাথমিক শিক্ষক পুল’ গঠিত হবে। তবে পুলের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানার বাইরের কোনো প্রার্থীকে বিবেচনায় আনা হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।