রাজশাহী: রাজশাহী বিভাগের সদ্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক। এরই মধ্যে উদ্যোগ বাস্তবায়নে রাজশাহী বিভাগের ৬৮টি উপজেলায় বিশেষ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিভাগীয় উপ-পরিচালক দেলোয়ার হোসেন এর আগে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শুদ্ধভাবে পাঠ্যপুস্তক পড়ার কর্মসূচি চালু করেছিলেন। তাতে বেশ সফলতা পাওয়া যায়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছেন।
এখানে শিক্ষকরাই প্রশিক্ষক, আবার শিক্ষকরাই প্রশিক্ষণার্থী। এজন্য যেসব কর্মশালার আয়োজন করা হবে তার জন্য কোনো ধরনের অর্থই খরচ করা হবে না। শিক্ষকরা নিজ দায়িত্বে ও উদ্যোগে যাতে এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন তার জন্য উপ-পরিচালক তাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন।
সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ১৩ হাজার ৯০৮ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়েছে। প্রথমেই তাদের এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে তিন দিন করে কর্মশালার আয়োজন করা হবে। প্রতি সপ্তাহে ২০৪টি কর্মশালা হিসাবে মাসে ৮১৬টি কর্মশালা হবে। এই হিসাবে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট তিন হাজার ২৬৪টি কর্মশালা হবে।
গত সোমবার এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তিন হাজার ৪৭৭ জন প্রাথমিক শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। রাজশাহী মহানগরের বোয়ালিয়া থানা এলাকার এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
প্রথম কর্মশালায় রাজশাহী মহানগরের উপশহর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নগরের ১৩টি সদ্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষকরা অংশ নেন।
কর্মশালার কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে নগরের হড়গ্রাম নতুনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক স্তরের অনেক বিষয় সম্পর্কে তারা আগে সচেতন ছিলেন না। যেমন পূর্ণমাত্রার বর্ণ, অর্ধমাত্রার বর্ণ বা মাত্রাবিহীন বর্ণ এগুলো তারা আগে এমনি পড়ে গেছেন। কখনো খেয়াল করেননিÑ কোনটি কী ধরনের। এই কর্মশালায় এসে এই বিষয়গুলো সুনির্দিষ্টভাবে জানা হলো। একইভাবে বর্ণগুলো শুদ্ধভাবে উচ্চারণের বিষয়েও কর্মশালায় পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক দোলোয়ার হোসেন বলেন, এই কর্মশালা শেষে শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা আগের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়বে। এই ধরনের একটি কর্মশালার আয়োজন করতে নূন্যতম ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। তিনি এটা নিখরচায় করার ব্যবস্থা করেছেন। সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে কর্মশালা করে যে সুফল পাওয়া যেত তা নিখরচায় পাওয়া যাবে।
এ উদ্যোগে সাড়া দেওয়ার জন্য তিনি শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৪