রাবি: শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় তরুণ প্রজন্ম আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে তৈরি হবে না। এজন্য প্রয়োজন যুগপোযোগী বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা।
গতানুগতিক শিক্ষার আমূল পরিবর্তন করে অর্থপূর্ণ জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের ধারায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে হবে। আর সে লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান মন্ত্রী।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদালয়ের পুরনো ফোকলোর চত্বরে শেখ রাসেল মডেল স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক গোলাম কবির।
এরপর বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বর্ণপদক ও পুরস্কার বিতরণ এবং বিশিষ্ট গবেষকদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম। এজন্য তাদের প্রস্তুত করতে হবে। কিন্তু গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সেটা সম্ভব হবে না। নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষা, জ্ঞান, প্রযুক্তি দক্ষতার সঙ্গে পরিচয় করাতে হবে। পাশাপাশি তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে। বর্তমান সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
শুধু সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়নি উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে, জ্ঞান চর্চা, গবেষণা ও নতুন নতুন জ্ঞান সৃজনের জন্য। এই কাজ করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ অর্জনে কোনো কাজে আসবে না।
দেশের উন্নয়ন ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণালব্ধ নতুন নতুন জ্ঞান সৃজন করতে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল শোষণ ও দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের চার দশক পরেও সে লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। সে লক্ষ্য অর্জন করতে দেশের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশকে পরিবর্তনের জন্য তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। সততা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন সফলতার কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও বছরের শুরুতেই সারাদেশে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চশিক্ষা আধুনিক ও যুগপোযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন- অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. খন্দকার বজলুল হক, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদ। এসময় অনেকের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর সায়েন উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রফেসর এন্তাজুল হক।
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য এ অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হককে ‘সারোয়ার জাহান স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানকে উচ্চমানের গবেষণার জন্য ‘সারোয়ার জাহান গবেষণা স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়।
এছাড়া ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৪ কৃতি শিক্ষার্থীকে ‘অগ্রণী ব্যাংক স্বর্ণপদক’, আটজনকে ‘এ. কে খান স্বর্ণপদক’ ও পাঁচজনকে ‘ড. মমতাজউদ্দিন আহমদ স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৪