ঢাকা: প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপানো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের মধ্যস্থতায় বিশ্বব্যাংকের শর্তে রাজি হয়ে মানসম্পন্ন পাঠ্যবই ছাপাবেন বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা।
সোমবার (৩১ আগস্ট) শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বব্যাংক, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রতিনিধি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), প্রকাশক এবং প্রেস মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী সচিবালয়ে বিকেল থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা বিশ্বব্যাংক, এডিবি প্রতিনিধি ও এনসিটিবি চেযারম্যানকে নিয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মেছবাহ উল আলম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রাতে বাংলানিউজকে বলেন, পাঠ্যবই ছাপানো নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছিলো তার অবসান হয়েছে। পাঠ্যবই যেন মানসম্পন্ন হয় সে ব্যাপারে প্রকাশকরা বই ছাপাতে একমত হয়েছেন। এখন বই ছাপানোর কাজ শুরু হবে। প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা বই পাবে।
এনসিটিবি জানায়, ২০১৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিকে ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৫৮৬ কপি বই ছাপনোর কথা। ৩শ ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে ২শ ২১ কোটি টাকায় বই ছাপানোর কাজ পায় দেশীয় ২২টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৯ শতাংশ, অর্থাৎ ১৮ কোটি টাকা।
কিন্তু গত ১৭ আগস্ট বিশ্বব্যাংক জামানত ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, কাগজ কেনার পর বিশ্বব্যাংকের কারিগরি শাখার তত্ত্বাবধানে কাগজের মান ও ফর্মা পরীক্ষা, উপজেলা পর্যায়ে যাওয়া বইয়ের মান পরীক্ষার শর্ত দেয়। মান পরীক্ষার পর সন্তোষজনক হলে বিল পরিশোধ করার কথা জানায় বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের শর্তের কারণে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির অপারগতায় কার্যাদেশ দিতে পারছিলো না এনসিটিবি।
শিক্ষামন্ত্রী সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মতিঝিলে এনসিটিবি কার্যালয়ে প্রকাশকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বিতীয় দফায় সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠকে বসেন নাহিদ। এর আগের রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে কোনো সমস্যা হবে না। মানসম্পন্ন বই ছাপাতে সবাই একমত হয়েছেন।
এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনিয়াবাত রাতে বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী দুপুরের বৈঠকে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না।
তবে সচিবালয়ে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও কিছু জানায়নি বলে জানান শহীদ সেরনিয়াবাত।
তিনি বলেন, সমস্যা কেটে গেলে আমরা বই ছাপানোর কাজ শুরু করব।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৫
এমআইএইচ/এএ
** হুমকি প্রকাশকদের, বিশ্বব্যাংকের পক্ষে মন্ত্রী