ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এরশাদের পায়ে লুটিয়ে কাঁদলেন অনশনরত শিক্ষকরা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
এরশাদের পায়ে লুটিয়ে কাঁদলেন অনশনরত শিক্ষকরা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এমপিওভুক্তির দাবিতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পায়ে লুটিয়ে কাঁদলেন আমরণ অনশনরত শিক্ষকরা। কেবল আশ্বাস নয়, সমাধানের আশায় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের কাছে মিনতি করেন।



জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সৃষ্ট পদে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন’ চলছিলো গত ২২
ফেব্রুয়ারি থেকে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টপদে নিয়োগপ্রাপ্ত নন-এমপিও বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের এ কর্মসূচির পঞ্চম দিন শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি)। এদিন তাদের কয়েকজন বেশ অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুরে দেখতে যান এরশাদ। সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি শিক্ষকদের অনশন ভঙ্গের আহ্বান জানান।

এরশাদ বলেন, শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, আপনাদের দাবি মেনে নিতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, আপনি তো মা, আপনার এ সন্তানদের দেখবেন। অনাহারে শিক্ষকরা রাস্তায় শুয়ে থাকবে, এটা তো হয় না। আলোচনা করার
অনুরোধ করবো। প্রয়োজনে প্রজ্ঞাপন বাতিল করুন।

এ পর্যায়ে কয়েকজন শিক্ষক এরশাদের পা জড়িয়ে ধরেন ও কেঁদে বলেন, স্যার, কী অপরাধ করেছি, আমাদের বাঁচান।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবেন বলে বারবার তিনি শিক্ষকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী এ মুহ‍ূর্তে দেশের বাইরে আছেন। আগামী রোববার শিক্ষা সচিব আমার সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন। আপনারা অনশন ভাঙুন। বাড়ি ফিরে যান। বলেছি তো, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো আমি, এর একটা সমাধান করবো।

‘প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলবো, আপনি মানবিক হন, ক’টা টাকার জন্য তারা অনাহারে কেন থাকবে?’

তিনি বলেন, অনেক শিক্ষক মাত্র এক হাজার টাকা বেতন পান। কেউ কেউ তাও পান না। এটা কেন হবে? ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এ পাঁচ বছর বিনা বেতনে কীভাবে শিক্ষকরা বেঁচে আছেন? এছাড়া প্রতি প্রতিষ্ঠানে ৮শ বা এক হাজার টাকা শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। এ বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে আপনাদের দাবি মেনে নিতে বলবো।

এরপর পানি পান করিয়ে শিক্ষকদের অনশন ভাঙান তিনি।

সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক বিলাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তারা প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূতের দেওয়া আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে অনশন ভেঙেছেন ও বিকেলে বাড়ি ফিরে যাবেন।

তবে বাজেটের আগে আমাদের দাবি না মানা হলে, আবারও আন্দোলনে নামবো, বলেন তিনি।

পাশেই চলছিলো বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির অবস্থান ধর্মঘট।

এরশাদ সেদিকেও এগিয়ে যান। জাতীয় স্কেল অনুসারে বেতনের দাবিতে তাদের এ কর্মসূচিতে একমতের কথা জানান তিনি।

এরশাদের বরাতে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা নজরুল ইসলাম হিরণ বাংলানিউজকে বলেন, এরশাদ বলেছেন, আপনারাও বাড়ি চলে যান। আমি দেখবো বিষয়টা। সরকারের পক্ষ থেকে (সংশ্লিষ্টরা) কেউ আসেনি, এটা অমানবিক আচরণ।

তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা থাকবো, প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো, বলেন নজরুল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
এসকেএস/এফবি/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।