ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

উদ্বোধনের অপেক্ষায় ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র

ওয়ালিউল্লাহ ও নুর আলম হিমেল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
উদ্বোধনের অপেক্ষায় ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে(জাবি) উদ্বোধনের অপেক্ষায় ‘ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র’। খুব শিগগিরই এ গবেষণা কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।



ওয়াজেদ মিয়ার চিন্তা-চেতনা বাস্তবায়ন ও স্বপ্নকে সত্যি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বর্তমানে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির। উপাচার্য থাকাকালীন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করে ‘ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র’।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই গবেষণা কেন্দ্রের ভবন নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। খুব শিগগিরই এই গবেষণা কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানান কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মো. খবির উদ্দিন।

ছয় তলা বিশিষ্ট এই গবেষণা কেন্দ্রটি নির্মাণ হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের গবেষণাখাতকে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৩০ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বহুমুখী বিজ্ঞান গবেষণার জন্য ‘ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র’ নামে একটি উচ্চতর গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজ হাতে নেওয়া হয়। একই বছর তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের তত্ত্বাবধায়নে এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

৬তলা বিশিষ্ট এ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ল্যাব রুম হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ছয় তলায় থাকছে ১২০ আসন বিশিষ্ট বিশাল কনফারেন্স রুম। আর প্রথম তলা ব্যবহৃত হবে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য।

গবেষণাকেন্দ্রের জন্য প্রায় ১৫ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে। গবেষণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও গবেষণাগার পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ভিত্তিক সব অনুষদ ও বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এখানে গবেষণা করার সুযোগ পাবে। এছাড়াও প্রত্নতত্ত্ব এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরাও গবেষণা করতে পারবে। এই বিজ্ঞান গবেষণাগার পরিচালনার জন্য প্রতি বছর প্রায় ২৭ লাখ টাকা খরচ হবে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

‘ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র’র সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী নিখিল চন্দ্র ভৌমিক বাংলানিউজকে জানান, গবেষণার জন্য ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি দুর্লভ ও ব্যয়বহুল যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, অ্যাটোমিক অ্যাবজর্পশন স্পিক্টরোফটোমিটার: এএ ৭০০০-শিমাদজু কর্পোরেশ জাপান, হাই পারফরমেন্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি সিস্টেম (এইচপিএলসি)-শিমাদজু কর্পোরেশ জাপান, এফটিআইআর

স্পিক্টরোফটোমিটার: আইআর প্রেস্টিজ ২১-শিমাদজু কর্পোরেশ জাপান, ইউভি-ভিজিবল: স্পিকোর্ড ২০৫-জার্মানি, আল্ট্রাসনিক বাথ: মডেল সনোরেক্স-ডিকে ডিজিটাল ৫১২পি, আল্ট্রাল টেম্পারেচার ফ্রিজার: বাইন্ডার জার্মানি-মডেল ইউএফ ভি ৭০০, ইলিমেন্টাল অ্যানালাইজার: ইলিমেন্টার-জার্মানি মডেল ভারিও ইএল কিউব, অ্যাডভান্স রিসার্স

মাইক্রোস্কোপ: অলিম্পাস জাপান-মডেল বিএক্স৪+ডিপি৭২, টেরিনোকোলার স্টেরিও জুম মাইক্রোস্কোপ: মাইক্রো অস্টিয়া মডেল-‘ভিআইপিইআর’ এমজেড ৩০০০, রিফ্রিজারেটেড আল্ট্রাসেন্ট্রিফিউজ: হিট্রিকস্- জার্মানি মডেল রোটিনা ৪৪২আর, পিসি বেজড অটোমেটেড ইলেক্ট্রমিক্যাল ওয়ার্কস্টেশন: ইউএসএ-বেস ইপিসিলন, কমপ্লিট ইমারশন ওয়েল ফোটোমিক্যাল রি অ্যাক্টর: ইউকে-রায়োনেট আরপি আর-২০০।

এছাড়াও শেকিং ইনকিউবেটর, ওভেন, আল্ট্রাপুর ওয়াটার চেম্বার-টারমা, পারসিশন বেলেন্স-টলিডো, পিএইচ মেটার-হানা-এইচআই ২২১১ ক্রয় করা হয়েছে।

প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র যাত্রা শুরু করলে এই বিজ্ঞান গবেষণাগার বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক তৈরি করবে। বিজ্ঞান মনস্ক শিক্ষার্থীদের জন্য এটা বিশাল সুযোগ তৈরি করবে।

‘ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র’র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মো. খবির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এই বিজ্ঞান গবেষণাগার বাংলাদেশে উন্নত গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমি মনে করি এই বিজ্ঞান গবেষণাগারের গবেষকরা তাদের গবেষণা কর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি প্রযুক্তিশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। এখানে শুধু দেশি গবেষকরাই নন, বিদেশি গবেষকরাও তাদের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। খুব শিগগিরই এই গবেষণা কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এই বিজ্ঞান গবেষণার শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, সারা দেশের বিজ্ঞানমুখী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বিজ্ঞান গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা,  মার্চ ০৮, ২০১৬
পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।