ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাতীয় মর্যাদার অপেক্ষায় জোহা দিবসের ৪৮ বছর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
জাতীয় মর্যাদার অপেক্ষায় জোহা দিবসের ৪৮ বছর জোহার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন-ছবি-বাংলানিউজ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের বাঁচাতে বর্বর পাকিস্তানি সেনাদের বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তৎকালীন প্রক্টর ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা বলেছিলেন, কোনো ছাত্রের গায়ে গুলি লাগার আগে আমার বুকে গুলি লাগবে। 

সেদিন সত্যিই ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর আগে ড. জোহার বুকে গুলি চালায় পাকিস্তানি সেনারা। ড. জোহার রক্তে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে।

পতন ঘটে সামরিকজান্তা আইয়ুব খানের।

দিনটিকে দীর্ঘদিন ধরে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু ৪৮ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। দিবসটি শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হয় ‘জোহা দিবস’ হিসেবে। এদিন ক্যাম্পাসে ‘জোহা দিবস’ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবি এবং সার্জেন্ট জহুরুল হক হত্যার প্রতিবাদে ১৪৪ ধারা ভেঙে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পাকিস্তানি সেনারা মিছিলে গুলি করতে উদ্যত হয়। খবর পেয়ে তৎকালীন রাবি প্রক্টর শামসুজ্জোহা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদের সামনে দাঁড়ান।  

এ সময় তিনি পাকিস্তানি সেনাদের গুলি করতে নিষেধ করে বলেন, ‘কোন ছাত্রের গায়ে গুলি লাগার আগে তা আমার গায়ে লাগবে। ’ এক পর্যায়ে তিনি ছাত্রদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করে বেলা ১১টার দিকে ক্যাপ্টেন হাদী পিস্তল বের করে ড. জোহাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলিবিদ্ধ ড. জোহাকে পরে রাজশাহী মিউনিসিপ্যাল অফিসে নিয়ে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

ড. জোহার শাহাদ‍ৎ বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সকাল পৌনে ৭টায় ড. জোহার মাজার ও স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।  

বিকেল ৪টায় শহীদ শামসুজ্জোহা হলে আলোচনা সভা ও সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বলন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এদিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
আরআর/এমজেএফ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।