আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে বুধবার (২৯ মার্চ) সকালে সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা ও প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
‘কালপ্রিটদের গ্রেফতার করে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে’ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যখন শিক্ষক, অভিভাবকরা জড়িত থাকেন, তখন আর আমাদের যাওয়ার জায়গা থাকে না’।
‘শিক্ষকরা যখন জড়িত থাকেন, তখন আমাদের মুখ থাকে কোথায়? ছাত্ররা জড়িত, শিক্ষকরা জড়িত- এর চেয়ে আর লজ্জাস্কর বিষয় কী হতে পারে? শিক্ষকদের জন্য ইজ্জত থাকে না’।
সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে গত তিন বছর ধরে সরাসরি কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি বলেও দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী বা গুজব ছড়ানোদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে নাহিদ বলেন, ‘কেউই রেহাই পাবেন না। আমরা আইনগত সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো’।
সমালোচনাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ছাত্রদের বলেন যে, তোমরা ভালো করে পড়ে ভালো ফলাফল করো। কিন্তু তারা বলেননি। দয়া করে বলেন, ছাত্ররা নকলের মধ্যে জড়িত হয়ো না। আপনাদের কথা ছাত্ররা শুনবেন, বেশি ইফেক্ট হবে’।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনার সন্তানকে শুধু বড় সার্টিফিকেট দিলে হবে না, তাকে প্রকৃত মানুষ বানাতে হবে। এ মূল্যবোধটুকু না থাকে- গার্ডিয়ান টাকা দিয়ে প্রশ্নপত্র কিনে হাতে তুলে দেন, সর্বনাশ!’
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যেও হুঁশিয়ারি দেন নাহিদ।
‘আর শিক্ষক, যিনি সমাজের সবচেয়ে বড়। তিনি যদি জড়িত হয়ে যান, তাহলে আমরা যাবো কোথায়, দেশ যাবে কোথায়, ভবিষ্যত কোথায় যাবে? আর ওই ধরনের শিক্ষক যারা, অবশ্যই কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দয়া করে মান-ইজ্জত থাকতে থাকতে নিজেরা সরে যান। আপনাদের জন্য শিক্ষকতা পেশা না। তাদের অ্যালাউ করবো না’।
নাহিদ বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক যেই হোক এবং স্কুল হোক- আইনি ব্যবস্থা নেবো। কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেবো, কোনো ছাড় দেবো না’।
তিনি বলেন, ‘দেশে ১৫ লাখ ছেলে-মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে, তার খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ…। সেই অংশটি সংখ্যায় কিন্তু কম না। যতো বড়ই হোক, আমাদের যতো যতো বড়ই অপারেশন করতেই হোক, আমার হাত অর্ধেক কাটতে হোক, রাজি আছি। কিন্তু আমরা আর এ কাজটি গ্রহণ করতে পারছি না, আমাদের জাতি পারছে না’।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে চাপের কথা তুলে ধরে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের ওপর কী পরিমাণ চাপ। কী পরিমাণ দোষারোপ, মন্তব্য- আমরা চুপচাপ হজম করে গেছি। এ কারণে যে, আমরা কথা বললে প্রকাশ হয়ে গেলে ওই জায়গাটায় পৌঁছাতে পারবো না। আমরা মোটেই বসে নেই’।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসোইন বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হলে আইননত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
কোথায়, কারা, কীভাবে প্রশ্নপত্রের জন্য টাকা লেনদেন করেন, তাদের তথ্য তুলে আনতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান সচিব।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
এমআইএইচ/এএসআর
** ছাত্রসংসদ নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাহস করছে না