ঢাকা, সোমবার, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

শিক্ষা

ফাঁস রোধে পরীক্ষার দিন প্রশ্ন ছাপানো ও বিতরণ করা হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৭
ফাঁস রোধে পরীক্ষার দিন প্রশ্ন ছাপানো ও বিতরণ করা হবে

ঢাকা: প্রশ্ন ফাঁস রোধে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র স্থানীয়ভাবে ছাপানো ও সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

 

রোববার (০২ এপ্রিল) সকালে ঢাকা কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

স্থানীয়ভাবে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়া কবে নাগাদ হতে পারে, জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি আগামীবার করতে পারবো।

 

প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন নাহিদ।  

তিনি বলেন, গার্ডিয়ানরা সন্তানদের উৎসাহিত করেন। আর যদি কোনো শিক্ষক প্রশ্ন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছবি তুলে পাঠিয়ে দেন তাহলে কী করতে পারি? অভিভাবকরা সন্তানদের ঠিক রাখবেন, শিক্ষকরাও- আর তা না হলে সবাইকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।  

শনিবার দুইজন অধ্যক্ষসহ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, মামলা হয়েছে, বরখাস্ত করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তার চাকরি যাবে।  

রোববার স্মার্টফোন নেওয়ার জন্য হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ কেন্দ্রে সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ এবং মহাখালীতে তিনজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান নাহিদ।

প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী।

আইপিইউ সম্মেলন উপলক্ষে রাস্তা বন্ধ থাকায় পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যেতে সমস্যার বিষয়ে নাহিদ বলেন, পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলেছে সমস্যা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী রুটিন নিয়ে রাখেন, উনি এ ব্যাপারে খুবই সচেতন।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দশ শিক্ষা বোর্ডে এবার মোট ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬শ ৮৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। তবে গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থী কমেছে ৩৪ হাজার ৯শ ৪২ জন।

প্রথম দিন সকাল ১০টা থেকে এইচএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্র এবং ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্ট্যাডিজের (ডিআইবিএস) বাংলা আবশ্যিক প্রথম পত্র পরীক্ষা চলছে।

মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে শিক্ষার্থীরা আলিমে কুরআন মাজিদ এবং এইচএসসি ভোকেশনালে বাংলা-২ [সৃজনশীল (নতুন/পুরাতন সিলেবাস)] ও বাংলা-১ [সৃজনশীল (নতুন/পুরাতন সিলেবাস)] বিষয়ের পরীক্ষা হচ্ছে।  

এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা-২ (নতুন সিলেবাস) ও বাংলা-২ (পুরাতন সিলেবাস) এবং একাদশে বাংলা-১ (সৃজনশীল নতুন সিলেবাস) ও বাংলা-১ (সৃজনশীল পুরাতন সিলেবাস) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।  

আর কারিগরি বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা-ইন কমার্সে দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা-২ এবং একাদশে বাংলা-১ (সৃজনশীল) বিষয়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা শেষে ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে জানিয়ে নাহিদ বলেন, খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকেন তাহলে তা বেআইনি এবং এর ব্যত্যয় হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সূচি অনুযায়ী, তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১৫ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৬ মে শুরু হয়ে ২৫ মে শেষ হবে।
 
এবার আট হাজার ৮শ ৬৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুই হাজার ৪শ ৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ছয় লাখ ৩৫ হাজার ৬শ ৯৭ জন এবং পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ৯শ ৮৯ জন ছাত্রী।

গত বছরের তুলনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৩শ ৩১টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ৪৫টি। গত বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ১২ লাখ ১৮ হাজার ৬শ ২৮ জন। এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২শ ৭১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।  

এইচএসসিতে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে নয় লাখ ৮২ হাজার ৭শ ৮৩ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৯৯ হাজার ৩শ ২০ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম-এ ৯৬ হাজার ৯শ ১৪ জন এবং ডিআইবিএসে চার হাজার ৬শ ৬৯ জন পরীক্ষা দিচ্ছেন।
 
২০১২ সালে শুধু বাংলা প্রথমপত্রের সৃজনশীল বিষয়ে পরীক্ষা হলেও এ বছর ২৬টি বিষয়ের ৫০টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭/আপডেট: ১২১৯ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।