শিক্ষকরা বলছে, অন্য স্কুল পদায়ন করায় একাডেমিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটবে। কারণ, দীর্ঘ দিন এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে পাঠদান করতে গেলে নতুন নতুন ঝামেলা তৈরি হবে।
চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা এখন নিজ নিজ স্কুলে পদায়নের জন্য প্রতিদিনই ভিড় করছেন মন্ত্রণালয়ে। আর যাদের পদায়ণ হয়নি তারা আগেভাগেই মন্ত্রণালয়ে আবেদন-নিবেদন করছেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের মাধ্যমে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে গতি আনতে গত ২৩ মে পদোন্নতি যোগ্য সহকারীদের প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৫ মে ঢাকা মহানগরের ৮৭ জন সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দিয়ে নিজ স্কুলের পরিবর্তে অন্য স্কুলে পদায়ন করে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান একক সিদ্ধান্তে শিক্ষকদের নিজ স্কুলের পরিবর্তে অন্য স্কুলে পদায়নের সিদ্ধান্ত দেন। গত ৪ মে তিনি অবসরে যান।
অন্য স্কুলে পদায়ন করায় বিপাকে পড়েছেন চলতি দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকরা। এজন্য প্রতিদিনই মন্ত্রণালয়ে ধর্না দিচ্ছেন তারা।
একাধিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষকদের পদায়নের কর্মস্থল ২/৩ থানার দূরত্বের কারণে কেউ কেউ চলতি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি বা শেষ বয়সে শিক্ষকতা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। অধিকাংশের কর্মস্থলে যেতে যাতায়াত বাবৎ কমপক্ষে দুই-তিনশ’ টাকা বাড়তি খরচ হবে। দূর-দূরান্ত এক বা একাধিক যানবাহন পাল্টিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার পূর্বে কর্মস্থলে যোগদান করা দুরহ ব্যাপার। যার ফলে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অনেকটা প্রাণহীন হয়ে পড়বে।
চলতি দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকরা পিএসসির সুপারিশের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগণ্যতা করবেন না বলে পদায়নের আদেশে বলা হয়েছিল।
শিক্ষকরা বলছেন, নিজ স্কুলের পরিবর্তে অন্য স্কুলে আমাদের চলতি দায়িত্ব দেওয়ার কোনো দরকারই ছিলো না। চলতি দায়িত্বে কোনো আর্থিক সুবিধা থাকবে না। আমরা আগেই ভালো ছিলাম।
এক বিবৃতিতে চলতি দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের নিজ স্কুলে পদায়নের দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক মো.সিদ্দিকুর রহমান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, শিক্ষকদের পদায়ন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘ দিন পদোন্নতি বন্ধ থাকায় অধিকাংশের বয়স ৫৫ বছরের বেশি। অনেকেই ২০১৭ সালের মধ্যে অবসর যাবেন। এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য ফলপ্রসু করার স্বার্থে তাদের বাসস্থানের যতদূর সম্ভব কাছাকাছি পদায়ন করা উচিত।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকা মহানগরের পদায়ন নিয়ে বিব্রত মন্ত্রী। এজন্য নতুন করে অন্য জেলাগুলোর পদায়নের ক্ষেত্রে নিজ নিজ স্কুল বা কাছের স্কুলগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৭
এমআইএইচ/ওএইচ